আমাদের অর্থনীতির মুখোমুখি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বেগম জিয়ার ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন না করার ইতিবাচক প্রভাব অবশ্যই রাজনীতিতে পড়বে
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আশিক রহমান
বেগম খালেদা জিয়া এ বছর আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে, ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন থেকে বিরত ছিলেন। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি সিদ্ধান্ত। তার এই সিদ্ধান্ত আপনি, আমি যেমন ইতিবাচকভাবে নিয়েছি, তেমনি দেশের সব মানুষও তার এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তার এই পদক্ষেপ অভিনন্দন যোগ্যÑ দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারের এমন মন্তব্য করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই তিনি জাতীয় ঐক্য করার যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, চেষ্টা করছেন সবার সঙ্গে কথা বলতে, সবাইকে একটা জায়াগায় নিয়ে আসতে চাইছেন, সে প্রচেষ্টার জায়গা থেকে এ পর্যায়ে তিনি নিজেকে একধাপ এগিয়ে নিলেন। বেগম জিয়ার ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন না করার বিষয়টি ইতিবাচক ছাড়া আর কিভাবে নিবেন আপনি? আর ভালো কিছুর ইতিবাচক প্রভাব অবশ্যই রাজনীতিতে পড়বে। কেন পড়বে না? ভালো কাজ করলে তার একটা প্রভাব পড়বে না, তা হয় না। যেকোনো ভালো কাজের প্রভাব অবশ্যই পড়ে। বেগম জিয়ার ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন থেকে বিরত থাকাটাও দেশে ইতিবাচক রাজনীতি চর্চার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বেগম খালেদা জিয়ার এই সিদ্ধান্ত রাজনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, রাজনীতিতে সহযোগিতামূলক একটা ব্যাপার ঘটতে পারে। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ২০ দলীয় জোটের সম্পর্কটা একটু সুসম্পর্কের একটা সূচনা তো হলো। বেগম জিয়ার এই উদ্যোগ কিভাবে, কতটুকু প্রভাব পড়ে তা ভবিষ্যত জানে। কিন্তু সূচনাটা ভালো হয়েছে। এখন সূচনাটা পরিণত হোক- এটাই চায় মানুষ।
১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন না করার ফলে রাজনীতিতে কী বিএনপির জায়গাটি সুবিধাজনক বলা যায়? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর ফল নিশ্চয়ই আসবে। আমি আগেই বলেছি, একটা ভালো পদক্ষেপের সূচনা হয়েছে। এখন এটা কতদূর যাবে, কী পর্যায়ে পরিণত অবস্থায় আসবে, তার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা সবাই মিলে তার অপেক্ষা করি, দেখি কী হয়। কিছুদিন যাক, তাহলেই তো বোঝা যাবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, আমি বরাবরই বলেছি, জামায়াতকে সরে যাওয়া উচিত। কারণ তাতে করে বিএনপির ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন পর্যায় থেকে শক্তিশালী হবে। জামায়াতকে বিএনপি বা তার জোট থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি হয়তো বেগম জিয়া এককভাবে নিবেন না। কারণ এটা ২০ দলীয় জোটের ব্যাপার। জোট মিলে যদি একটা পদক্ষেপ নেয়, তাহলে সেটা ভিন্ন ব্যাপার।
জাতীয় কমিটি ঘোষণার পর থেকে বিএনপিতে অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা কেন? বিএনপির ঘুরে দাঁড়াবার প্রক্রিয়াটি কী বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এই অস্থিরতায়? জানতে চাইলে বিশিষ্ট এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, বিএনপির জাতীয় কমিটি গঠন করার পর যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, অসন্তোষ লক্ষ্য করা যাচ্ছে নেতাদের মধ্যে, তা অস্থায়ী একটা ব্যাপার। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে বলেই আমি মনে করি। তাছাড়া আরও কিছু পদ তো দেওয়াই হচ্ছে, কমিটি করে। দলের ভিতরও এ নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে। আমি মনে করি না, এত বড় একটা রাজনৈতিক দলের জন্য এটা বড় কোনো সমস্যা বা সংকট। এছাড়া বিএনপি সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চলছে বলেও মনে করেন এই রাজনৈতিক ভাষ্যকার।
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন