ইসলামে পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার তাগিদ
হুমায়ুন আইয়ুব
গ্রিন ঢাকা, ক্লিন ঢাকার নানা কর্মসূচি রাজধানীর দুই মেয়রকে প্রশংসনীয় করছে। রাজধানীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের রাস্তার পাশে ঝুলন্ত ডাস্টবিন দেওয়ার প্রশংসাও মানুষের মুখে মুখে। কিন্তু ঝুলন্ত এই ডাস্টবিন যদি চুরি হয়ে যায়! এর দায় কে নেবে? এই লজ্জা নগরবাসী কোথায় রাখবে?
প্রথম কথা হলো, সব ধর্মেই চুরি ঘৃণিত কাজ। ইসলামেও চুরিকে জঘন্য মনে করা হয়। বিচারিক শাস্তি অনুযায়ী চোরের হাত কাটার বিধানও দিয়েছে ইসলাম। কুরআন বলছে, যে সব পুরুষ ও নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও, তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসাবে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি। আল্লাহ পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়। (সূরা মায়েদা- ৩৮)।
যদিও এই শাস্তি প্রয়োগের স্বাধীনতা প্রশাসন বা বিচারালয়েরও। কিন্তু চুরির কাজটি চরম অপরাধ এটা বুঝতে কুরআন-হাদিস আর যুক্তির প্রয়োজন হয় না। ঝুলন্ত এই ডাস্টবিন বিষয়ে কিন্তু চুরি প্রধান লক্ষ্য বা উপলক্ষ নয়! এখানে নগরবাসীর মনে রাখার মতো বিষয় হলো, আমার শহর আমি পরিচ্ছন্ন রাখব। পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখব ঝুলন্ত ডাস্টবিন বা ময়লা ফেলার প্রতিটি পাত্র। নগর জীবনে পথে-ঘাটে ময়লা ফেলা বা নির্ধারিত ডাস্টবিন ব্যবহার না করাও অন্যজনের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মহানবীর ভাষ্য হলোÑ প্রকৃত মানুষ তো সেই যার হাত-মুখ থেকে অপরভাই নিরাপদ। মানুষের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা ইমানের অর্ধেক।’ (মুসলিম, মিশকাত)। কুরআন আমাদের শেখাচ্ছে পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার সবক, পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখো এবং অপরিষ্কার থেকে দূরে থাকো।’ (সূরা মুদ্দাসসির : ৪-৫)।
নগর জীবনে দৈহিক রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে হলে দেহকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়, কাপড়-চোপড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খাবার খেতে হয়। বাসা-বাড়ির আঙিনায়ও চাই সুস্থ পরিবেশ। আধুনিক বিজ্ঞান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছে। এ জন্য বলা হয়ে থাকে, প্রতিরোধ রোগ নিরাময়ের চেয়ে শ্রেয়। আধুনিক যুগের এ ধারণা পবিত্রতা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কিত ইসলামের মৌলনীতির অনুসরণ মাত্র।
এই শহরের ঝুলন্ত ডাস্টবিন যথানিয়মে ব্যবহার করা এবং সংরক্ষণ করা উভয়টিই আমার নাগরিক দায়িত্ব। আসুন, শহরের পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে ঝুলন্ত এ ডাস্টবিন চুরির হাত থেকে রক্ষা করি। সুস্থ পরিচ্ছন্ন শহর গড়ি। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম