‘আমি হিজড়া বলে আমার বোনকে কেউ বিয়ে করতে চায় না’
মতিউর রহমান, সাভার : আমি হিজড়া বলে আমার বোনকে কেউ বিয়ে করতে চায় না। আমার বাবা-মা গ্রামের মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারেন না। এ দুঃখ সহ্য না হওয়ার আমি বাড়ি ছেড়ে চলে আসি। আমি একটি গার্মেন্টসে চাকরি নিয়েছিলাম। কিন্তু সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করায় কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে বের করে দেয়।
গতকাল বুধবার দুপুরে আশুলিয়ার বাইপাই এলাহী কমিউনিটি সেন্টারে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নকল্পে আয়োজিত আলোচনা সভায় শিখা একথা বলেন।
হিজরা কাজলী জানায়, আমরা সবাই বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনদের মিলেমিশে থাকতে চাই। আমরা সবাই সুযোগ পেলে কাজ করতে চাই। তবে কীভাবে আমাদেরকে চাকরি দিবেন কোথায় দিবেন আমাদের সুযোগ-সুবিধা ও কাজের ধরন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে কাজ করতে চাই।
অপর হিজড়া রুনি বলেন, আমাদের ভালো একটি ব্যবস্থা করে দেয়া হোক। হিজড়াদের জন্য আলাদা প্রতিষ্ঠান করা হলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হবে। আমরা লেখাপড়া করতে পারিনি। আমাদের দুঃখ-কষ্টের কথা কেউ জানে না। আমরা বাবা-মা, ও তাদের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত।
ঢাকা জেলা পুলিশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিধ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ফারজানা ইসলাম। আশুলিয়া শিল্প পুলিশের পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ, আইপিও জামে মসজিদের খতিব মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাইফী, বঙ্গবন্ধু ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ঢাকা এর নির্বাহী পরিচালক মো. সালেহ আহমেদ।
ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, আমরা সকলে একত্রিত হতে পারলে অবশ্যই হিজড়াদের জীবনমান উন্নয়ন সম্ভব হবে। রাষ্ট্রের নির্দেশ থাকতে হবে আমরা কিভাবে হিজড়াদের পাশে দাঁড়াবো। আপনাদের থাকার জায়গা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা আমাদের দায়িত্ব এবং হিজড়াদের জন্য নতুন আইন করে তা বাস্তবায়নে দাবি জানান। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা