১০৬ ভরি স্বর্ণসহ দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার অভিনব প্রতারণার পর উত্তরায় তরুণী গ্রেফতার
বিপ্লব বিশ্বাস : রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে ১০৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ২০ লাখ টাকা ও ৮ লাখ টাকার সমপরিমাণ বিভিন্ন দেশের মুদ্রাসহ প্রতারকচক্রের এক তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে এসব স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা উদ্ধার করা হয়। এর আগে ৯ আগস্ট সাদিয়া ওরফে নদী ওরফে তানিয়া নামের এক তরুণীকে গ্রেফতার করে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। ওই তরুণীর নামে উত্তরার পূর্ব ও পশ্চিম থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
বিমানবন্দর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ হিল কাফী এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গত কয়েক মাস ধরে উত্তরার বিভিন্ন বাসায় প্রবেশ করে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণীর বিরুদ্ধে উত্তরার বিভিন্ন থানায় অভিযোগ পড়ে। এরপর পুলিশ তাকে খুঁজতে থাকে। ৯ আগস্ট সাদিয়া ওরফে তানিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কের ১৮ নম্বর বাসার দোতলার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ১০৬ ভরি সোনার অলঙ্কার, ২০ লাখের বেশি টাকাসহ আরও বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাংলাদেশি টাকায় এসব মুদ্রার বিনিময় মূল্য ৭/৮ লাখ টাকা হতে পারে। ওই ফ্ল্যাট থেকে পুরুষের মানিব্যাগ, নারীদের পার্স, সিম ও মেমোরি কার্ডও উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেসব বয়স্ক বাবা-মায়ের ছেলে বা মেয়ে প্রবাসে থাকে সেইসব পরিবারে এই তরুণী কৌশলে গাড়ি ও নগদ কিছু ডলার নিয়ে প্রবেশ করে। এরপর সে নিজেকে ওইসব প্রবাসী ছেলে-মেয়েদের বান্ধবী হিসেবে পরিচয় দেয়। বয়স্ক বাবা-মাকে বলে, আমিতো আপনাদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে লন্ডনে থাকি। আজকে আমার একটা বিয়ের দাওয়াত আছে শপিং করতে যাব, আমার কাছে কিছু ডলার আছে কিন্তু নগদ টাকা নেই। এ ডলারগুলো রেখে আমাকে নগদ কিছু টাকা দিন। এরপর যখন তারা আলমিরা খুলে টাকা আনতে যায় তখন সে সবকিছু খেয়াল করে। কয়েকদিন পর একটি শাড়ি নিয়ে আবার ওই বাসায় গিয়ে বলে, আন্টি আপনার জন্য একটা শাড়ি নিয়ে এসেছি। চলেন আমার স্বামী আপনাকে দেখতে চেয়েছে, চলুন। এই সুযোগে তাদের শাড়ি পরতে পাঠিয়ে বাসার আলমিরা থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে পালিয়ে যায়। ইংরেজি ও বাংলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথা বলতে পারা ওই নারীর অভিনব প্রতারণার সঙ্গে একটি চক্র জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ। তাদের খোঁজে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি