রফিক আহমেদ : জাতীয় পার্টি ও চার বাম দলের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, বর্তমানে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার কারণে দেশে জঙ্গিবাদে নারীদেরও বিস্তার ঘটেছে। গতকাল বুধবার বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা একথা বলেন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, হতাশা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও উগ্র ইসলামী মতাদর্শের কারণে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে। তিনি বলেন, ১০ জঙ্গিকে গুলি করে মেরে ফেললে ১০০ জঙ্গি গজিয়ে উঠবে। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দেশে গজিয়ে ওঠা জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেক্জ্জুামান বলেন, রাষ্ট্র শাসনব্যবস্থা, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন, বিচার ও প্রশাসন, শিক্ষাব্যবস্থাসহ সর্বক্ষেত্রে যখন অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা চলতে থাকে, অনিয়ম যখন নিয়মে পরিণত হয়, দুর্নীতিকে যখন নীতিবোধ ঠেকাতে পারে না তখন নানা উপসর্গের মতো জঙ্গিবাদও নানাভাবে বিস্তার লাভ করে। এ পরিস্থিতির শিকার শুধু পুরুষরা হয় না, নারীরাও নানা মাত্রায় যুক্ত হয়ে পড়ে। আজ আমরা দেখছি, রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন, অর্থনীতি বেসামাল লুটপাট, প্রশাসনে দলীয়করণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা গণহয়রানি, শিক্ষার মান নামিয়ে দিয়ে সার্টিফিকেটের ছড়াছড়ি, শিক্ষিত বেকার সংখ্যা ক্রমবর্ধমান ভ্রান্ত চিন্তা-দর্শনের দিকে তরুণ যুবকদের মোহগ্রস্ত করে চলেছে। শুধু পুলিশি ব্যবস্থা দিয়ে এর সমাধান সম্ভব নয়। প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করে সমস্যার মূলে ও গভীরে ঢুকে এর সমাধান সূত্র বের করা জরুরি। পরস্পর দোষারোপের রাজনীতি ও সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা এর সহায়ক হতে পারে না। দেশকে যতখানি ভ্রষ্ট পথে সরিয়ে আনা হয়েছে এর থেকে ফিরতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বলেন, যারা বিগত ৪০ বছর ধরে দেশ চালিয়েছে, তাদের ভুল রাজনীতির কারণে দেশে এখন নারী-পুরুষ জঙ্গি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, এ সময় সমাজে ধর্মীয় রাজনীতির প্রভাবের কারণে সহজেই জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, মধ্যপাচ্যে আইএস-এর ব্যাপক উত্থানের কারণে বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তাদের বুঝাতে হবে তারা যেন এ পথে অগ্রসর না হয়।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, জঙ্গিরা এখন নারী-পুরুষ সবাই একত্রিত হয়ে হামলা চালাচ্ছে। প্রত্যেক পাড়া ও মহল্লায় সবাইকে সংগঠিত করে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা কোনো ধরনের ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটাতে না পারে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি