বাবা-মা’র জন্য হজ
আল ফাতাহ মামুন
হজ ফরজ হওয়ার পর আদায় না করে মারা গেলে অথবা শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়লে ওই ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার সন্তানরা হজ করতে পারবে। ‘ৎুহাইনা গোত্রের একজন নারী রাসুল সা. এর কাছে এসে বলল, ‘আমার মা হজের মান্নত করেছিলেন। কিন্তু হজ আদায়ের আগেই তিনি মারা গেছেন। এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব?’ রাসুল সা. বললেন, ‘তুমি তার পক্ষ থেকে হজ কর। যদি তোমার মায়ের কোনো অনাদায়ী ঋণ থাকত তাহলে তুমি কি তা পরিশোধ করতে না? আল্লাহর ঋণ তার চেয়ে বেশি আদায়যোগ্য।’ সহিহ বুখারি; ১৭৩২
‘খাছআম গোত্রের এক নারী রাসুল সা. কে বলল, ‘আল্লাহ বান্দার ওপর যে হজ ফরজ করেছেন তা আমার বৃদ্ধ পিতার ওপর এমন সময় ফরজ হয়েছে, যখন বার্ধক্যের কারণে সে বাহনে চড়তে অক্ষম। আমি তার পক্ষ থেকে হজ করলে তার হজ আদায় হবে কি? রাসুল সা. বললেন, হ্যাঁ! হবে। সহিহ বুখারি; ১৭৩৩
মৃত বা অক্ষম বাবা-মা’র জন্য হজ করার আগে অবশ্যই নিজের হজ সম্পন্ন করতে হবে। রাসুল সা. এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন, ‘শুবরুমার পক্ষ থেকে লাব্বাইক’। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কে এই শুবরুমা? সে বলল, আমার ভাই অথবা বন্ধু। রাসুল সা. বললেন, তুমি কি নিজে হজ করেছ? সে বলল, না। রাসুল সা. বললেন, আগে নিজে হজ কর, তারপর শুবরুমার হজ করবে। সুনানে আবু দাউদ; ৩০৩৯; ইবনে মাজাহ, ২৯০৩
বাবা-মা’র জন্য হজ করার ইচ্ছা করলে ইহরাম বাঁধার সময় বলবে, ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল হাজ্জাতি আন ওয়ালিদাই/ওয়ালিদাতি’। অর্থ ‘হে আল্লাহ! আমার বাবা/মা’র পক্ষ থেকে আমার হজ কবুল করুন।’ তালবিয়া পাঠসহ হজের অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মেই হবে। মহান আল্লাহর কাছের বাবা-মা’র জন্য সার্বক্ষণিক দোয়া ও ইসতেগফার করবে। কোন কারণে যদি ‘দম’ ওয়াজিব হয় তবে পশু যবেহের সময় বলবে, ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল হাদি আন ওয়ালিদাই/ওয়ালিদাতি’। অর্থ ‘হে আল্লাহ! আমার বাবা/মা’র পক্ষ থেকে ‘হাদি’ কবুল করুন।’ তবে কুরবানির সময় এগুলো বলার প্রয়োজন নেই। এর জন্য নিয়তই যথেষ্ট। ফতোয়ায়ে শাইখ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহামান বিন জাবরিন, ফতোয়া নং ২২৬।
লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ