শিশুর হাত-পা বেঁধে পিপড়ার চাকে ফেলে নির্যাতনের অভিযোগ
শামসুজ্জোহা পলাশ, চুয়াডাঙ্গা : দামুড়হুদা উপজেলার পীরপুরকুল্লা গ্রামে সৎমা ও বাবা ৭ বছরের শিশু জুনাইদকে হাত-পা বেঁধে পিপড়ার চাকে ফেলে নির্যাতন করেছে। প্রতিনিয়ত এমন অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করে শিশু জুনাইদের সৎমার সংসারে ভাত খেতে হয়। বুধবার স্থানীয় একটি দৈনিকে বিষয়টি উঠে আসলে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদকে নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশ পেয়ে দামুড়হুদা থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে কার্পাসডাঙ্গা বাজার থেকে জুনাইদের বাবা জামসেদকে আটক করতে সক্ষম হলেও তার সৎমা পালিয়ে গেছে।
প্রতিবেশীরা জানায়, জামসেদ আলী কার্পাসডাঙ্গা বাজারের ব্রিজ মোড়ে ফলের ব্যবসা করে। সকালে ব্যবসার উদ্দেশ্যে কার্পাসডাঙ্গায় যায় ফিরতে রাত ১০/১১টা বাজে। ফলে ঠিকমতো ছেলের খোঁজ-খবর নিতে পারে না। জামসেদের ১ম স্ত্রী মারা গেছে উপজেলার বুইচিতলা গ্রামে সে ২য় বিয়ে করে। তাদের কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে সন্তান জুনাইদ। জুনাইদের বয়স যখন ৪ বছর তখন পারিবারিক কলহে তার মা বিষপানে আত্মহত্যা করে। মাস দুই না পেরোতেই জামশেদ রোজিনা নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে। এরপর অবহেলা, অযতœ আর প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নির্যাতন সহ্যকরে জুনাইদও বড় হতে থাকে সৎমায়ের সংসারে।
গত সোমবার সকালে জুনাইদ পুকুরে গোসল করার অপরাধে তার বাবা ও সৎমা মিলে জুনাইদকে হাত পা বেঁধে পিপড়ার ঝাঁকে ফেলে রাখে। জুনাইদ পিপড়ার কামরে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে এবং পানির জন্য চিৎকার করলেও একফোটা পানি দেয়নি তার বাবা ও সৎমা। একসময় জুনাইদ নিস্তেজ হয়ে পড়লে একই পাড়ার কলিমের ছেলে বাবলু তাকে পিপড়ার ঝাঁক থেকে উদ্ধার করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসে।
ততক্ষণে জুনাইদের শরীর পিপড়ার কামড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় মেম্বর রাজ্জাক জুনাইদের চিৎকিসা শেষে বাবা-মাকে বিষয়টি নিয়ে কঠোর সতর্ক বাণী দেন। ভবিষ্যতে জুনাইদের সঙ্গে এমন খারাপ আচরণ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুনাইদের বাবার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ওর সৎমার কোনো দোষ নেই। সব দোষ আমার। এলাকাবাসীসহ সচেতন মহল জুনায়েদের বাবা ও সৎমার শাস্তি দাবি করেছে।
দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ জানান, এসপি স্যারের নির্দেশ পেয়ে তদন্ত কাজ শুরু করেছি। এছাড়া নির্যাতিত শিশুটির বাবাকে আটক করতে পারলেও তার সৎমা পালিয়ে গেছে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা