ভারতে বাংলাদেশি গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে জঙ্গি মুসা তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জেএমবি সদস্যরা জঙ্গিহামলা চালাচ্ছে
আজাদ হোসেন সুমন : সিরিয়ায় আইএসের তত্ত্বাবধানে থাকা জেএমবির সদস্যদের পরামর্শে তরুণ ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জেএমবি সদস্যরা বাংলাদেশে জঙ্গিহামলা চালাচ্ছে বলে স্বীকার করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার বাংলাদেশি জঙ্গি মুসা। গত মঙ্গলবার রাতে এবং বুধবার ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সল্ট লেকে এনআইএর কার্যালয়ে মুসার সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে মঙ্গলবার কলকাতায় যান বাংলাদেশের তিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ভারতের একাধিক গণমাধ্যমে এ সংবাদটি গতকাল ফলাও করে প্রচার হয়েছে।
খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জঙ্গিবাদী কর্মকা-ের সঙ্গে ‘নব্য জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)’ জড়িত বলে দাবি করছে পুলিশ। মুসার কাছ থেকে এই ‘নব্য জেএমবি’ সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। এ ছাড়া তার কাছ থেকে এই সংগঠনের নেতা আবু সুলেমান ওরফে মোহাম্মদ সুলেমান সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এনআইএ সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মুসা বলেছেনÑ বয়সে তরুণ ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জেএমবি সদস্যদের একাংশ সিরিয়ায় থাকা আইএসের সদস্যদের পরামর্শে বাংলাদেশে জঙ্গিহামলা চালাচ্ছে। এ পরামর্শদাতাদের মধ্যে সুলেমান অন্যতম।
ভারতের বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে জেএমবির নেটওয়ার্কের বিষয়টি সামনে চলে আসে। ধরা পড়ে সংগঠনটির কয়েকজন সদস্য। জেএমবির ওই সদস্যরা মূলত আল কায়েদার অনুসারী ছিলেন। কিন্তু খাগড়াগড়ের ঘটনার কিছুদিন পরই জেএমবির ওই তরুণ সদস্যরা সংগঠন থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নেয় এবং আইএসের পথ ধরে। তখন এই ধারার অংশটি মনে করতে থাকে, বিশাল প্রস্তুতির দরকার নেই। ‘শত্রু হত্যা’র জন্য দ্রুত পরিকল্পনা করে কাজ সারতে হবে। এ কারণে ‘নব্য জেএমবি’র সদস্য সংখ্যা কম হলেও তৎপরতা বেশি বলে এনআইএ সূত্র জানায়।
গত ৬ জুলাই মুসাকে গ্রেফতার করে ভারতের সিআইডি পুলিশ। আইএসের সঙ্গে মুসার যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে সেদেশের পুলিশ। মুসার সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গিদের ও বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের যোগাযোগ থাকার কথাও জানিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ৫ জঙ্গির নাম উল্লেখ করে ভারতের কাছে সহায়তা চায়। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং অবশ্য গ্রেফতার জঙ্গিদের বাংলাদেশে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এরই মধ্যে এ প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতর সূত্র দাবি করেছে।
এ ব্যাপারে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (অপরাধ তদন্ত) হুমায়ুন কবীর বলেন, জঙ্গিদের ভারত থেকে ফেরত দেওয়ার আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া সারতে বেশ কিছুদিন সময় লেগে যাবেÑ তাই দ্রুত তথ্য সংগ্রহের জন্য তিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ভারতে পৌঁছেছেন। ভারতীয় পুলিশ ও গোয়েন্দারা তাদের সহায়তা করছে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী