ত্রুটিপূর্ণ আইন না করতে প্রধান বিচারপতির আহ্বান
এস এম নূর মোহাম্মদ : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, সংসদ সদস্যরা যখন আইন করবেন, তখন সেগুলো যেন সঠিকভাবে হয় তা খেয়াল করতে হবে। কারণ ত্রুটিপূর্ণ আইন হলে বিচার বিভাগের উপর চাপ পড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে মাহমুদুল ইসলাম স্মরণসভা কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রশাসনে যারা আছেন তারা তাদের লাইনের বাইরে গিয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না। এতে আমাদের বিচার বিভাগের উপর চাপ পড়ে যায়। আমরা দেখব না, দেশে দুই ধরনের বিচার ব্যবস্থা চলুক। বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি প্রথমে বলব, বিচারক হিসেবে আমার পরিধি হচ্ছেÑ আমি বিচারক। আমার কাজ সময়মতো কোর্টে যাওয়া, সময়মতো রায়টা দিয়ে দেওয়া। আমি ব্যক্তি বিচারক হিসেবে যেন সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকি।
আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি আশা করব আমাদের আইনজীবীদের কাছে কোনো মক্কেল মামলা নিয়ে এলে তারা মাহমুদুল ইসলামের মতো ব্যবহার করবেন। যদি মামলার গ্রহণযোগ্যতা না থাকে তাহলে মামলা ফিরিয়ে দেবেন। এতে মামলার চাপ কমবে। আর যদি গ্রহণযোগ্যতা থাকে, তাহলে মামলার প্রেজেন্টশন ঠিকভাবে করবেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা এটা ভুলে যাচ্ছি।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আইন সবার জন্য সমান। আইনের গতি একটাই। আইন কোনোদিন কারও মুখ চেয়ে কথা বলে না। আমরা আইনজীবী, বিচারক, প্রশাসনে যারা আছি এবং আইন প্রণেতারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের লাইনের ব্যাপারে যদি ওয়াকিবহাল হই, তাহলে মাহমুদুল ইসলামের জীবন, ব্যক্তিত্ব, আইনের প্রজ্ঞা ও নীতির ব্যাপারে যেটা আলোচনা করছি সেটা সার্থক হবে।
অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিনের উপস্থাপনায় এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক, সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের কয়েকজন বিচারপতি ও আইনজীবী।
সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী