নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সন্দেহভাজনদের আটক বা অভিযানে সহায়তার জন্য পুলিশের মতো একটি নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলছে, একইসঙ্গে আটক ব্যক্তিদের ধরে রাখতে তারা নিজস্ব হাজতখানাও তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। কর্মকর্তারা বলছেনÑ দুর্নীতি তৎপরতায় পুলিশসহ অন্যদের উপর নির্ভরশীলতা কমাতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
দুর্নীতির জন্য সন্দেহভাজনদের আটক করা বা তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার জন্য পুরোপুরি নির্ভর করতে হয় পুলিশের উপর। আবার কাউকে আটক করা হলে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং এর আগে ও পরে তাদের রাখতে হয় থানা হাজতে। কিন্তু সংস্থাটি চাইছে এখন থেকে এসব কাজ তারা নিজেরাই করবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব আবু মোহম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, গ্রেফতার করার পর আসামিকে রাখার জন্য আমাদের পুলিশের শরণাপন্ন হতে হয়। কিন্তু এসব আসামিদের আমাদের নিজস্ব হেফাজতে রাখার জন্য আমরা নারী-পুরুষদের জন্য দুটি হাজতখানা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের অফিসের নিজস্ব নিরাপত্তা, গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা এবং আসামিদের আনা-নেওয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনী দরকার হয়। কিন্তু এ সময় পুলিশ তাদের নিজস্ব কাজে ব্যস্ত থাকায় আমাদের কাজে তারা সহায়তা করতে পারে না। এজন্য আমরা একটি সশস্ত্র ইউনিট গঠন করার পরিকল্পনা করেছি। আর এ বাহিনী গঠন করার জন্য অন্য বাহিনী থেকে জনবল নিয়ে আসা হবে এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
কিন্তু দুদকের স্বাধীনভাবে কাজ করা নিয়ে যেখানে প্রশ্ন, সেখানে এ ধরনের উদ্যোগ কতটা কাজে দেবে এমন প্রশ্নে কামাল বলেন, এখানকার সচিব হিসেবে বলতে পারি যে, এখানে উপর মহলের কোনো চাপ নেই।
তিনি আরও বলেন, দেশের কল্যাণের জন্য সরকার যে কাজগুলো করবে, সে কাজগুলো আমরাও করতে পারি। কিন্তু সব কাজ আমাদের থাকে না, যে কাজগুলো আমাদের থাকে সেগুলোই আমরা করে থাকি। আর এজন্যই জনগণ মনে করে যে সরকার যা বলছে দুদক তা পালন করছে।
এদিকে দুর্নীতি দমনবিরোধী সংস্থা টিআইবি বলছে, প্রকৃত অর্থে দুর্নীতির জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করাই দুদকের মূল চ্যালেঞ্জ। সেটি করতে না পারলে এসব নতুন উদ্যোগ অর্থহীন হয়ে যাবে।
দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশন নিজেকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু সেটি তখনই সফল হতে পারে যখন তারা প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারবে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম