নিজামী ও সাঈদীর প্লট বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্ত
ফয়সাল খান : পৃথক কারণে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-ে দ-িত জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী এবং আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্লট বরাদ্দ বাতিল করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
নিজামীর প্লট বরাদ্দে বিভিন্ন অসঙ্গতি থাকায় এবং কিস্তির টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সাঈদীর প্লট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় রাজউক।
জানা যায়, বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ২০০৬ সালের ৯মে রাজউকের একটি প্লট পেতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। একই আবেদনে তিনি বনানী আবাসিক এলাকার ১৮ নম্বর সড়কের ৬০ নম্বর প্লটটি সরেজমিনে অবরাদ্দকৃত অবস্থায় খালি আছে মর্মে জানান। নিজামীর আবেদনে মন্ত্রীর নির্দেশে রাজউকের ০৮/২০০৬তম সাধারণ সভায় নিজামীকে বনানী অথবা উত্তরায় প্রাপ্তি সাপেক্ষে পাঁচ কাঠা আয়তনের একটি প্লট বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর নিজামীর নামে বনানীর ১৮ নম্বর সড়কের ৬০ নম্বর প্লটের সাময়িক বরাদ্দপত্র দেয় রাজউক। এর চারদিন পর পুরো মূল্য পরিশোধ করে প্লট বুঝে নেন তিনি।
প্লট বরাদ্দকালীন মূল হলফনামা না থাকা ও দাখিলীয় ফটোকপি হলফনামায় নিজামীর সই না থাকা, মিশন ডেভেলপারের আমমোক্তার হিসেবে রাজউকের অনুমোদন না পাওয়া, আবাসিক প্লটকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার, সরকারের অনুশাসন ছাড়াই নিজামীর নামে প্লট বরাদ্দ এবং পরবর্তীতে পাওয়া সরকারের অনুশাসন রাজউকের বোর্ডসভায় উপস্থাপন না করার জন্য নিজামীর প্লটটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় রাজউক।
এদিকে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় সাঈদীর প্লট বরাদ্দ বাতিল করেছে রাজউক। জানা যায়, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ২০০১ সালের ২৬ আগস্ট মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/সংসদ সদস্য ক্যাটাগরিতে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে পাঁচ কাঠা আয়তনের একটি প্লটের জন্য আবেদন করেন। এই আবেদনে রাজউক ২০০৩ সালের ২২ ডিসেম্বর ৮৪৫৬ নম্বর কোডের মাধ্যমে সাঈদীর নামে প্লট বরাদ্দ দেয়। ২০০৪ সালের ২০ মার্চ সাঈদী সোনালী ব্যাংকের রাজউক শাখার ১০৩৭০ নম্বর রশিদের মাধ্যমে ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। ২০০৫ সালের ১২ জুন রাজউক সাঈদীর নামে চূড়ান্ত বরাদ্দপত্র জারি করে। প্লটের চূড়ান্ত বরাদ্দপত্র পাওয়ার পর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পরিশোধ করেননি। দ্বিতীয় কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা ছিল ২০০৫ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত। পরে এই সময়সীমা বাড়িয়ে ২০০৬ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত করা হয়। এরপর সাঈদী আর রাজউকে যোগাযোগ করেননি।
গত ২৮ জুলাই রাজউকের বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজউকের চেয়ারম্যান বজলুল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজউক পরিচালনা পর্ষদের সদস্য (উন্নয়ন) মো. আবদুল রহমান, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আকতার উজ জামান, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) মো. আসমাউল হোসেন ও সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. আবদুল হাই।
প্রসঙ্গত, গত মাসে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মানবতাবিরোধী সব অপরাধীর প্লট বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সম্পাদনা: মোরশেদ