জঙ্গি ব্যস্ততায় চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাগুলোর তদন্ত ধীর গতিতে
ইসমাঈল হুসাইন ইমু : জঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, গ্রেফতার ও অভিযান অব্যাহত রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আর এ কারণে রাজধানীর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাগুলোর তদন্ত চলছে ধীর গতিতে।
অবশ্য দু’একটি মামলার রহস্য উদঘাটন হলেও বেশিরভাগ ঘটনার নায়করা এখনো অধরাই। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তদন্তে সময়তো লাগবেই। তবে বর্তমানে দেশে জঙ্গি নিয়ে সতর্কাবস্থায় রয়েছে পুলিশ। আর এ কারণে কিছুটা ধীর গতিতে চলছে প্রায় সব মামলার তদন্ত। শিগগিরই তদন্ত শেষে চুড়ান্ত প্রতিবেদনও দেওয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
রাজধানীতে গত কয়েক বছরে দলীয় কোন্দলে যে কয়েকটি হত্যাকা- ঘটেছে, তার মধ্যে ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই গুলশান শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে গুলিতে নিহত হন যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক মিল্কি। এ ঘটনায় পরের দিন যুবলীগ নেতা তারেককে আটক করে র্যাব। পরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান তারেক।
২০১৪ সালের ৯ আগস্ট রাতে শেরেবাংলা নগর এলাকায় ৫০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার কয়েক দিন পর পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করলেও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট মধ্য বাড্ডায় আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে গুলিতে নিহত হন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামাসহ চারজন। এ ঘটনায় কয়েক দিন পর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের পাঁচ নেতা-কর্মী গ্রেফতার হন। বাড্ডা ও শেরেবাংলানগর এলাকার দুই হত্যাকা-ের ঘটনায় এখনো চার্জশিট দেওয়া হয়নি।
বাড্ডার ঘটনার বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব) উপ-কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, বাড্ডায় যুবলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান গামাসহ চারজন হত্যার ঘটনায় পাঁচ থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কেউ কেউ হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আর কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনায় এখনো চার্জশিট দেওয়া হয়নি। চার্জশিট দিতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
শেরেবাংলা নগর থানার আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির হত্যা মামলার তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে এ হত্যাকা-ে জড়িতদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (পশ্চিম) উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান জানান, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির হত্যার ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ইজারা নেওয়াকে কেন্দ্র করে দলীয় কোন্দলে তিনি নিহত হন। ঘটনার বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। কাউকে গ্রেফতার করা না গেলেও খুব শিগগির আদালতে এ মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।
এছাড়া যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক মিল্কি হত্যার ঘটনায় আদালতে র্যাবের দেওয়া চার্জশিট বাদী প্রত্যাখ্যান করায় নতুন করে তদন্ত শুরু করে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি।
এদিকে, যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম হোসেন, সায়েদাবাদের আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুল, ৪০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুর রহমান, রামপুরায় ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ উজ্জ্বল, এমপি ইলিয়াছ আলী মোল্লার এপিএস আমির হোসেন কাঞ্চনসহ অনেক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা এখনও কোনো গতি পায়নি।
জানা গেছে, দেশে প্রথমবারের মতো দুই বিদেশি নাগরিক তাবেলা সিজার ও কুনিও হোশি হত্যাকা- আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভাবিয়ে তুলেছিল। এর জের কাটতে না কাটতেই গাবতলীতে পুলিশ হত্যা। এর এক দিন পার না হতেই পুরান ঢাকার হোসেনী দালানের সামনে তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলার ঘটনা। এসব ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে কাজ করা হচ্ছে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি