পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় ১৯তম সার্ক সম্মেলন বাতিল হতে পারে
বিশ্বজিৎ দত্ত : আগামী নভেম্বরে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য ১৯তম সার্ক সম্মেলন বাতিল হয়ে যেতে পারে। বেলুচিস্তান ও কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের বিরোধের কারণে সম্মেলনটি বাতিল হতে পারে। সার্কের নিয়ম অনুযায়ী কোনো সদস্য রাষ্ট্র সম্মেলনে অনুপস্থিত থাকলে সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। এর আগে কারগিল যুদ্ধের কারণে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী সার্ক সম্মেলনে যোগদান না করায় সম্মেলন বাতিল হয়েছিল। এবারেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্মেলনে যোগদান নাও করতে পারেন। আগামী ৯ ও ১০ নভেম্বর পাকিস্তানের ইসলামাবাদ ও মারিতে সার্ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এসব তথ্য কূটনৈতিক মহলের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এবারের সার্ক সম্মেলন বর্জন করতে পারেন। তবে এই সম্মেলনের বিকল্প হিসেবে আঞ্চলিক পর্যায়ে বিমসটেক (দ্য বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর সেক্টরাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) জোটকেই সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন তিনি। আগামী ১৬ অক্টোবর ভারতের গোয়ায় বিমসটেক-এর সম্মেলন হতে যাচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত থাকবেন। এই জোটে পাকিস্তান ছাড়া সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশও রয়েছে। এছাড়া রয়েছে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার। জঙ্গিবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশেরও সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। সার্কের প্রাক প্রস্তুতির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অংশগ্রহণ করেননি। প্রথমদিকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে অংশ নিতে না চাইলেও পরে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন।
রাজনাথ সিং বৈঠকে গেলেও পাকিস্তান তার প্রতি খুব ভালো আচরণ করেনি বলে পরে রাজনাথ সিং অভিযোগ করেছেন। পাকিস্তান রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে সার্কের অন্যান্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের ভাষণ প্রচার করা হলেও রাজনাথের ভাষণ প্রচার করা হয়নি। এ নিয়েও ক্ষুব্ধ হন তিনি। আগামী ২৫ ও ২৬ আগস্ট সার্কের অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও বৈঠকে যাচ্ছেন না। তার স্থলে যাচ্ছেন ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব।
বিমসটেক সম্মেলনের এজেন্ডার মধ্যে রয়েছে, সন্ত্রাসবাদ দমন ও উন্নয়ন। বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড সন্ত্রাসদমন ইস্যুতে পরস্পর অনেকটাই কাছাকাছি। স্থানীয় পর্যায়ের সন্ত্রাসে এই দেশগুলো আক্রান্ত। উন্নয়নের নিরীখেও এই দেশগুলো কাছাকাছি। এই দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের তেমন কোনো বিরোধও নেই। সার্ক অঞ্চলভুক্ত হয়ে বাংলাদেশ-ভারতে যে অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো পায়, বিমসটেক বাস্তবায়ন হলে একই সুবিধা পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে থাইল্যান্ডের বাজার ও মিয়ানমারের বাজারে শুল্কমুক্তভাবে প্রবেশ করতে পারবে। এই হিসেবে সার্ক সম্মেলন প- হলেও বাংলাদেশের কোনো অসুবিধা হবে না বলে মনে করছেন অনেকেই। সম্পাদনা : আ. হাকিম