ফারুক আলম : রাজধানীর হাজারীবাগে বড় ট্যানারি শিল্পের মালিকরা প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে কারখানা চালাতে পারলেও ক্ষুদ্র কারখানার মালিকরা তা পারছেন না। এজন্য অনেকে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর শ্রমিকরা কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। এভাবে পাট শিল্পের মতো ট্যানারি শিল্প ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ।
শাহীন আহমেদ গতকাল হাজারীবাগে তার নিজ কার্যালয়ে আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, হাজারীবাগে ট্যানারি মালিকদের প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হচ্ছে। যাদের একটি ড্রাম আছে তাদের জরিমানা আর যাদের ২০টি ড্রাম আছে তাদের জরিমানা একই। এর ফলে ক্ষুদ্র ট্যানারি মালিকরা এ ব্যবসা থেকে ঝরে পড়বেন। তিনি বলেন, ইচ্ছা থাকলেও তারা সাভারে কারখানা স্থানান্তর করতে পারছেন না। আসন্ন চামড়া মৌসুমে রাতারাতি ট্যানারি সরিয়ে নেওয়াও সম্ভব হবে না। এছাড়া সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে এখনও বর্জ্য অপসারণের পুরো কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় ব্যবসায় লোকসান না গুনে আসন্ন মৌসুমে চামড়া কেনা বন্ধ করে দিতে পারেন ট্যানারি মালিকরা। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ আবেদন করবো।
হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তর না করা পর্যন্ত ১৫৪ ট্যানারি শিল্প মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে গত ১৮ জুলাই রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়ের একমাস পার হলেও সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরের প্রস্তুতি নেননি মালিকরা।
হাইড অ্যান্ড স্কীন রিটেইল ডিলার মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সদস্য ফরিদ উদ্দিন এই প্রতিবেদককে বলেন, দেশে অস্থির অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়া ব্যবসায় ধস নেমেছে। আগে লবণের বস্তা ৬শ টাকায় কিনতাম এখন তা ১২শ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, চামড়া পুরনো হলে দাম কমে যায়। ঈদুল ফিতরের চামড়া এখন পর্যন্ত বিক্রি করতে পারিনি। এই মুহূর্তে চামড়া ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন। এ কারণে অনেক ব্যবসায়ী কোরবানির পশুর চামড়া কিনবেন না।
পটুয়াখালীর এক ফড়িয়া ব্যবসায়ী আব্দুল গনি বলেন, ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্যে ঈদুল ফিতরে ১ হাজার ও ১৫শ টাকায় চামড়া কিনেছি। তা এখন ৬শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। ভাবছি আগামী ঈদে আর চামড়া কিনব না।
সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী