• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

প্রথম পাতা

বেকার তরুণ কত কোটি?

প্রকাশের সময় : August 22, 2016, 12:00 am

আপডেট সময় : August 21, 2016 at 11:43 pm

 

নূসরাত জাহান : এখন যারা তরুণ, তাদেরকেই তৈরি হতে হবে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে। কিন্তু এর জন্য চাই প্রস্তুতি, চাই কাজ। কিন্তু যাদের হাতে আগামীর চাবি, সেই তরুণদেরই একটা বড় অংশ বাধ্য হয়ে কাটাচ্ছে বেকার সময়। এভাবে চলতে থাকলে এক দশক পরই একটা সামাজিক টাইমবোমার কবলে পড়বে বিশ্ব।

বুড়োরা না যাওয়া পর্যন্ত চাকরির বোধহয় আর সম্ভাবনা নেই তরুণদের। কেননা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এ মুহূর্তে বিশ্বে বেকার তরুণ আছে সাড়ে ৭ কোটি। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে যা সর্বোচ্চ। এ পরিসংখ্যান আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর। ওই সাড়ে সাত কোটি তরুণের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে সবাই যে ইউরোপ-আমেরিকার তা নয়। আইএলওর হিসাবে অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট তথা ওইসিডিভুক্ত ৩৪টি দেশে ২ কোটি ৬০ লাখ তরুণ না করছে পড়াশোনা, না করছে চাকরি। কোনো প্রশিক্ষণের মধ্যেও তারা নেই।

জাতিসংঘের হিসাব মতে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সংখ্যাটা প্রায় ২৬ কোটি ২০ লাখ। সামগ্রিক হিসাবে দেখা যাবে, বিশ্বের মোট তরুণের এক-চতুর্থাংশ, অর্থাৎ প্রায় ২৯ কোটি (যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার সমান) তরুণ শ্রমবাজারে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না।

এর কারণ? জরিপে কিছু উত্তর পাওয়া গেছে। বিপুল সংখ্যক বেকার তরুণ-তরুণী নিজের ইচ্ছাতেই কোনো কাজকর্ম করছে না। বেকার ২৯ কোটির চার ভাগের এক ভাগই দক্ষিণ এশিয়ার নারী। সামাজিক বাধার কারণেই চাকরি বা ব্যবসা হতে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে তারা। তা ছাড়া ২৪ বছরের কম বয়সীদের বেশিরভাগই চুক্তিভিত্তিক কাজের দিকে ঝুঁকে আছে। উন্নত বিশ্বের ২৪ বছরের কম বয়সীদের এক-তৃতীয়াংশই চুক্তিভিত্তিক কাজ করছে। মেয়াদ শেষ হওয়া মাত্রই তারা বেকার হয়ে পড়বে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ চিত্র আরও নেতিবাচক। সেখানকার তরুণদের এক-পঞ্চমাংশ কাজ করছে কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই। ঘরের কাজ থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়েছে এ জরিপে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের অর্ধেক তরুণই তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী শ্রম দিতে পারছে না।

বিশ্বে মোট তরুণের অর্ধেকই আছে দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায়। বেকার তরুণের সংখ্যা এসব অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি। এমনিতে যত উন্নতই হোক না কেন সাউথ আফ্রিকাতেই এ সমস্যা খুব প্রকট। সেখানে চাকরি পাওয়া ও চাকরি যাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে কঠিন নিয়মকানুন। এ কারণে সাব-সাহারাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাউথ আফ্রিকাতেই বেকার তরুণের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১১ সালে ইউরোপজুড়ে তরুণদের বেকারত্বের ফলে যে ক্ষতি হয়েছিল, তার পরিমাণ সমগ্র ইউরোপের জিডিপির ১.২ শতাংশ। এ ক্ষতির চক্র থেকে সহসাই মুক্তি মেলে না। কারণ ১৫-২৪ বছর বয়সে যাদের ব্যবহারিক কাজের অভিজ্ঞতা হয় না, পরবর্তী জীবনে তাদের চাকরি হারানোর আশঙ্কাটা থেকেই যায়। প্রশিক্ষণ পেতে দেরি হওয়ায় আয়ের দিক দিয়েও তারা পিছিয়ে থাকে।

তরুণদের বড় অংশ বেকার থাকলে শুধু অর্থনীতি নয়, সমাজেও বিপর্যয় নিশ্চিত। কদিন আগে বিনয়ের সঙ্গে সেটা স্বীকার করেছে ব্রিটিশ সরকার। তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য বছরে ৩৬০ কোটি পাউন্ডের বেনিফিট বিল বরাদ্দ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। অপরাধীর তালিকায় নাম লেখানো দুই হাজার তরুণকে কাজের সন্ধান দিতে প্রকল্প চালু করেছিল ন্যাশনাল গ্রিড নামের একটি সংস্থা। ইয়ুথ কন্ট্রাক্ট প্রোগ্রাম চালু হয়েছিল লিভারপুল, ম্যানচেস্টারেও। কিন্তু কোনোটিই বলার মতো অবস্থানে যেতে পারেনি। ঢালাওভাবে শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দোষারোপ করা হয়নি কেপিএমজির রিপোর্টে। এর জন্য দায়ী করা হয়েছে সরকারি উদ্যোগে ক্যারিয়ার সার্ভিস গড়ে না ওঠার বিষয়টিকেও।

একই দৃশ্য যুক্তরাষ্ট্রেও। দেশটির শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী সেখানে এখন ২০-২৪ বছর বয়সী বেকার আছে ৮২ লাখ। কাজের অভাবে কলেজ পড়–য়াদের কাঁধে চাপছে ঋণের বোঝা। এখন যা প্রায় এক লাখ কোটি ডলারের কাছাকাছি। এ কারণে তরুণদের এমন সব চাকরি করতে হচ্ছে, যার জন্য আদৌ কলেজ ডিগ্রিরও দরকার হয় না।

তরুণরা চাকরি না পেলে কী কী ঘটবে তার একটা তালিকা পাওয়া যাবে উইকিপিডিয়ায়। তাতে প্রথমেই আছে মানসিক স্বাস্থ্যের কথা। আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি তরুণদের মধ্যেই দেখা যায়। আর এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখে ‘আমাকে দিয়ে কিছু হবে না’ ধরনের মানসিকতা। কর্মসংস্থানের অভাবই টিনএজার ও তরুণ-তরুণীদের এমনটা ভাবতে বাধ্য করে।

বেকারত্বের ফলে বিনামজুরির কাজের সংখ্যাও বাড়ছে। এ কালে যার আধুনিক নাম ইন্টার্নশিপ। এশিয়ার চেয়ে ইউরোপেই এ ধরনের বিনা বেতনে কাজের হিড়িক বেশি। কেবলমাত্র অভিজ্ঞতা নিতে কিংবা নিজেকে জাহির করে পরে চাকরি আদায় করে নেবে এমন স্বপ্নেও তরুণরা রাজি হয়ে যায় বিনা পারিশ্রমিকে। অথচ এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অধরাই থেকে যায় বেশিরভাগের।

যুক্তরাজ্য সরকারসহ একবাক্যে সবাই স্বীকার করেছেন ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রচলিত কাঠামোর সংস্কার না করে তরুণদের কাজে লাগানো সম্ভব নয়। ব্যবসার ধরন কেন্দ্রীভূত না রেখে বিকেন্দ্রীকরণ করা হলেই তৈরি হতে পারে নতুন কাজের। এছাড়া সমাজ বিজ্ঞানীদেরও সময় এসেছে আনকোরা চাকরির ক্ষেত্র তৈরি নিয়ে ভাবার। এতে কিছু বাড়তি খরচ হয়ত গুনতে হবে। তবে বিনিময়ে একটা অতিকায় সামাজিক টাইমবোমার হাত থেকে বেঁচে যাবে রাষ্ট্র। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01708156820

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)