‘বাবুল আক্তার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে এখন জল ঘোলা করার চেষ্টা করছেন’
আজাদ হোসেন সুমন : পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে নিজেই আবার চাকরি ফিরে পেতে ধর্না দিচ্ছেন বলে মন্তব্য পুলিশ সদর দফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার।
তাদের মতে, একবার রিজাইন দিলে- সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের পূর্ব পর্যন্ত তিনি আর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন না। সূত্র জানায়, বাবুলের দেয়া অব্যাহতি প্রত্যাহারের আবেদনটি ডিআইজি প্রশাসন বিনয়কৃষ্ণ বালার কাছে রয়েছে।
গতকাল তার দফতরে এ প্রসঙ্গে আলাপকালে এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, বাবুল ২৪ জুন রাতে স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে চাকুরি থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছেন। সেটা নিয়মানুযায়ী মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওটা এখন মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তারা এব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেবে। তিনি আরো বলেন, বাবুল ওই অব্যাহতির আবেদন প্রত্যাহারের যে আবেদন করেছে- সেটি পুলিশ সদর দফতরেই আছে। সেটা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নিয়ম নেই। বাবুল আক্তার এটা নিয়ে জল ঘোলা করার পায়তারা করছেন। যা একটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন পদস্থ কর্মকর্তার কাছ থেকে কাম্য নয়- এতে তিনি পুলিশের কাছে আরো বিতর্কিত হচ্ছেন।
সূত্রমতে, বাবুল আক্তার পুলিশ বাহিনীকে পাশ কাটিয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবরে একই আবেদন করেছেন। সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় চাকরি থেকে অব্যাহতি ও প্রত্যাহার দুটো আবেদন এক সাথে ( সুপারিশ ব্যতিত) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাবে সিদ্ধান্তের জন্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন ডিআইজি গতকাল এ প্রতিবেদকে বলেন, বাবুল চাকরি থেকে অব্যাহতির আবেদন করার পরও একাধিকবার চেষ্টা করেছেন কাজে যোগদান করার জন্য। কিন্তু পুলিশ সদর দফতর থেকে গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়ায় তিনি যোগদান করতে পারেননি। ওই কর্মকর্তার মতে, তিনি আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছেন, পদত্যাগপত্রে তিনি স্বাক্ষর করতে চাননি। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। কে এবং কেন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এই কর্মকর্তার সাথে এমন করলো সেটা তিনি কোথাও উল্লেখ করেননি।
এদিকে গতকাল মুঠোফোনে এক প্রশ্নের জবাবে বাবুলের শ্বশুর এ প্রতিবেদকে বলেন, বাবুল পুলিশের একজন চৌকস কর্মকর্তা। স্ত্রী হারিয়ে-সন্তানদের মুখের দিকে তাকাতে পারে না। কী কারণে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছে সেটা এখন সে নিজেও বলতে পারছে না। তার সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় যদি কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি হয়েও থাকে সেটা ক্ষমা করে তাকে চাকরিতে ফিরতে দেয়া উচিৎ। কারণ, সে কোনো অসৎ কর্মকর্তা ছিল না। তার কোনো ব্যাংক ব্যালেন্স নেই। এই চাকরিই তার একমাত্র পাথেয়। তার দুটো নিস্পাপ এতিম সন্তানের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় বাবুলের চাকরিতে ফেরার পথ সুগম করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান তিনি। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত