মার্গারিতায় গর্বিত বাংলাদেশও
মোস্তফা মামুন
এবারের অলিম্পিকে বাংলাদেশ থেকে কয়েকজন খেলোয়াড় অংশ নিলেও তারা উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশের বংশোদ্ভুত মার্গারিতা মামুন তার জিমন্যাস্ট ইভেন্টে খুব ভালো পারফরমেন্সের কারণে স্বর্ণ জিতে নিজের সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়া ও বাংলাদেশকে গৌরবের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
মার্গারিতা মামুনের অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ের মাধ্যমে আমরা অবশ্যই আনন্দিত ও গর্বিত। অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে এখানকার মেয়েরা শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল। মার্গারিতা মামুনের এই জয়ের মধ্য দিয়ে যে বার্তাটা আমরা পাই তা হচ্ছে, বাংলাদেশের বংশোদ্ভুত হয়েও তার যে শারীরিক সক্ষমতা, ভালো কিছু করা তার পক্ষেও যে সম্ভব, সেটা প্রমাণিত হয়েছে। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পেলে আমাদের মেয়েরাও যে যেকোনো বিশ্ব আসরে জয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম, তারই সাক্ষ্য বহন করে মার্গারিতার স্বর্ণ জয়ের মধ্যে। মার্গারিতা মামুন রাশিয়ায় প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন বলেই হয়তো অলিম্পিকের মতো আসরে স্বর্ণ জয় করতে সক্ষম হয়েছেন। এদেশের হয়ে যদি তিনি খেলতেন, তাহলে হয়তো তার পক্ষে স্বর্ণ জয় করা সম্ভব ছিল না! কারণ আমাদের দেশে রাশিয়ার মতো সুযোগ-সুবিধা ও পরিবেশ পেত না। আমরাও বুঝতে পারতাম না তিনি বিশ্বমানের একজন খেলোয়াড়। আমরা তাকে এই পর্যায়ের পৌঁছাতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে পারতাম না।
মার্গারিতার সাফল্যে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। কিন্তু আমরা যদি ধরেই নিই, দেশের খেলোয়াড় অন্য দেশের হয়ে খেললেই ভালো করতে পারবে, তা ভুল। দেশে যে খেলোয়াড় রয়েছে তাদের জন্য যথেষ্ট পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ভালো করে নতুন খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে, ভালো স্পোর্টস কালচার তৈরি করতে হবে, তবেই আমরা ভালোকিছু অর্জন করতে পারব দেশের হয়েই। সঙ্গে সঙ্গে দেশের নারীর জাগরণের এক বিরাট বিপ্লবের ব্যাপারে বড় ভূমিকা রাখবে।
পরিচিতি : ক্রীড়া বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ : শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন