সর্বজনের সর্বপ্রাণের অস্তিত্বের লড়াই
আনু মুহাম্মদ
‘রামপাল চুক্তি ছুঁড়ে ফেলো, সুন্দরবন রক্ষা কর’Ñ এই স্লোগান নিয়ে সুন্দরবনবিনাশী সকল প্রকল্প বাতিলসহ ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ২০ আগস্ট ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দিনব্যাপী এবং দিনের বিভিন্ন সময়ে দেশের বহু স্থানে অবস্থান কর্মসূচি সফলভাবে পালিত হয়েছে। জাতীয় কমিটির বাইরেও বহু সংগঠন ও ব্যক্তি শহীদ মিনারে এসে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন সংগঠন এর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে নিজ নিজ ব্যানারেও কর্মসূচি পালন করেছেন। দেশের বাইরেও বার্লিন, লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরে প্রবাসী বন্ধুরা সংহতি জানিয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন। এই কর্মসূচির সঙ্গে সমর্থন জানিয়ে অসংখ্য মানুষ চিঠি, ই-মেইল, ফোন, এসএমএস, ফেসবুকের মাধ্যমে বার্তা দিয়েছেন। এই কর্মসূচি এবং চলমান আন্দোলনে সবচাইতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন তরুণ বন্ধুরা। গবেষণা, লেখালেখি, বক্তব্যে, বিতর্কে, ছবি আঁকায়, গানে, নাটকে, ছড়ায়, তথ্যচিত্র নির্মাণে, সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলা মোকাবিলায় যে অদম্য, সংগঠিত ও স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখছি তাতে সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় জাগরণের সব লক্ষণ সুস্পষ্ট। অভিনন্দন জানাই সবাইকে।
এটি আমাদের সর্বজনের সর্বপ্রাণের অস্তিত্বের লড়াই। এই ঐক্য, সংহতি ও সক্রিয়তা আরও বাড়াতে হবে। সামনে আছে তিনমাসের কর্মসূচি, এর অনেক দিক আছে। দাবি না মানলে ২৪ নভেম্বর সারাদেশ থেকে ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ শুরু হবে। তবে তার আগে প্রতিটি বিভাগ, জেলা, থানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, গ্রামে শহরে সমাবেশ, মিছিল, গান, নাটকসহ বহু কাজে হাত দিতে হবে। আরও অনেক সৃষ্টি যোগ করতে হবে। জাতীয় কমিটি ছাড়াও নিজ নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি নিতে হবে।
আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রামপাল প্রকল্পের প্রতি জনগণের ‘না’ কে আরও জোরদার করব সুন্দরবনের প্রতি ‘হ্যাঁ’ কে অপ্রতিরোধ্য করবার জন্য। জনগণের শক্তি অবশ্যই যেকোনো চক্রান্ত, ভাড়াখাটা অপতৎপরতা, মিথ্যাচার, হামলা, হুমকিকে মোকাবিলা করতে সক্ষম। সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই, তাই সুন্দরবন রক্ষার এই লড়াইয়ে বিজয়েরও কোনো বিকল্প নেই।
লেখক : অর্থনীতিবিদ