দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রতিবেদন আফগান-ইরাক যুদ্ধফেরত ব্রিটিশ সেনাদের মানসিক দুর্ভোগ রেকর্ড পর্যায়ে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তান ও ইরাকে যুদ্ধ করা ব্রিটিশ যোদ্ধাদের মানসিক দুর্ভোগ এখন রেকর্ড পর্যায়ে। তারা মারাত্মক মানসিক ব্যাধিতে ভুগছেন। তাই অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্টে এডাম লুশার লিখেছেন, আমরা এখন আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের প্রকৃত মূল্য দিতে শুরু করেছি। সেনাবাহিনীতে বর্তমানে কর্মরত অথবা সাবেক কর্মকর্তা বা সদস্যদের সরকার মানসিক অসুস্থতার জন্য যে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে তাও পৌঁছেছে রেকর্ড পর্যায়ে। এসব মানুষকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য গঠন করা হয়েছে আর্মড ফোর্সেস কমপেনসেশন স্কিম। এর বিশ্লেষকরা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে যে পরিসংখ্যান দেখিয়েছে তাতে দেখা যায়, মানসিক ব্যাধিতে ভোটা এসব সদস্যকে যে ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে তার সংখ্যা বছরে শতকরা ৩৭৯ ভাগ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯-২০১০ সালে এর পরিমাণ ছিল ১২১ জন। ২০১৫-১৬ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৫৮০। ১১ বছরে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ। কি ধরনের মানসিক ব্যাধিতে তারা আক্রান্ত অথবা তারা আদৌ যুদ্ধে গিয়েছেন কিনা তা পরিষ্কার করে বলা হয় নি। তবে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের পূর্ব সময়ের চেয়ে বেশি। আফগানিস্তান ও ইরাকের যোদ্ধাদের মধ্যে এমন লক্ষণ বেশি এবং তারা সহায়তা চাইছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হ্েচছ। এডাম লুশার লিখেছেন, আমরা কেবল হিমশৈলের অগ্রভাগ দেখতে পাচ্ছি। এতে আফগানিস্তান ও ইরাকে যোদ্ধারা কি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন সেই ভীতির প্রকাশ পাচ্ছে। বর্ষীয়ান যোদ্ধারা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন, অদৃশ্য মানসিক ক্ষত নিয়ে যেসব নারী-পুরুষ রয়েছেন তারা এখনও আর্মড ফোর্সেস কমপেনসেশন স্কিমের সহায়তার জন্য লড়াই করছেন। কথা ছিল তাদেরকে এ সংস্থা যথাসম্ভব সহায়তা দেবে। ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছেন ডিন আপসন (৩৬)। তার দেখা দিয়েছে পোস্ট-ট্রাউমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার (পিটিএসডি)। তিনি বলেছেন, তারা আমার বিষয়ে কোন কেয়ার করে না। সত্য কথা হলো কি, আমরা যুদ্ধ করেছি আমাদের দেশের জন্য। যুদ্ধ বিষয়ক তিনটি সফর করেছি। তার বিনিময়ে কিছুই পাই নি। তিনি রয়েল ইঞ্জিনিয়ারস কোরের সাবেক সদস্য। বলেন, দৃশ্যমান ক্ষতের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। যদি অঙ্গহানি হয় তাহলে তারা সহায়তা দেবে। কিন্তু ক্ষত যদি অদৃশ্য হয় সেক্ষেত্রে তারা কিছুই দিতে চায় না। তিনি বলেন, অনেক সেনা সদস্য আছেন, যারা কোন পথ না পেয়ে সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করেন। তার মতে, আগামী এক দশকের মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে এমন অসুস্থ যোদ্ধাদের একটি জোয়ার শুরু হবে। দাতব্য সংস্থা কমব্যাট স্ট্রেস-এর মেডিকেল সেবা বিভাগের পরিচালক ডা. ওয়াল্টার বুসুত্তিল বলেছেন, মানসিক ব্যাধি এমন একটি বিষয়, যা প্রকাশ পেতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়। অনেক সেনা সদস্যের মধ্যে এমন লক্ষণ দেখা দিতে পারে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ