আনোয়ারুল করিম: মেঘালয় সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে সিলেট-মৌলভীবাজার হয়ে ত্রিপুরায় প্রতিদিন দিনের বেলা সর্বোচ্চ ১৬০টি ট্রাক যাতায়াত করাতে পারবে ভারত। এর মধ্যে ৮০টি একপথে প্রবেশ এবং অন্যপথে ৮০টি ফিরে যেতে পারবে। এসব ট্রাকে জ্বালানি তেল ও গ্যাস ছাড়া অন্য কিছু পরিবহন করা যাবে না। এ পণ্যের জন্য প্রতিটনে কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ২ পয়সা করে মাসুল নেবে বাংলাদেশ। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সই হওয়া সীমিত সময়ের সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী এ শর্তগুলো ধার্য করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অণুবিভাগের সূত্র এসব তথ্য জানায়।
চুক্তি অনুযায়ী মেঘালয়ের ডাউকি (তামাবিল-জাফলং) সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে ডিজেল, কেরোসিন, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসসহ জ্বালানিবাহী ভারতীয় লরিগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। সিলেট শহরের পূর্ব প্রান্তের শাহ পরান বাইপাস দিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর সড়ক ধরে মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা হয়ে ট্রাক ও লরিগুলো শমসেরনগর চাতলাপুর (কৈলাশহর) সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে ত্রিপুরায় পৌঁছবে। ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য নির্ধারিত প্রায় ১৪০ কিলোমিটার ওই সড়ক ব্যবহারে কিলোমিটার প্রতি/টন ১ টাকা ২ পয়সা হারে মাসুল দেবে ভারত।
ভারী বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে ভারতের আসাম থেকে ত্রিপুরা সড়ক (এনএইচ ৪৪) যোগাযোগ অনুপযোগী হয়ে পড়ায় জ্বালানি পরিবহনে (ট্রান্সশিপমেন্ট) বাংলাদেশ নিজ ভূখ- ব্যবহারের সাময়িক ওই সুযোগ দিচ্ছে। দিল্লির অনুরোধে সাড়া দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে একটি মূল সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে। সই হওয়া সমঝোতার প্রাথমিক মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে এটি বাড়ানোর প্রয়োজন হলে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক সপ্তাহ আগে এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ফের আলোচনা হবে, উভয়ে সম্মত হলে মেয়াদ বাড়াতে কোনো বাধা থাকবে না।
খুব শিগগিরই জ্বালানি পরিবহন শুরু হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান। ভারতীয় জ্বালানি পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকের ড্রাইভার ও সহযোগীরা পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন এবং এদেশে অবস্থানকালে তারা দেশের প্রচলিত আইন মেনে চলতে বাধ্য থাকবেন। যাত্রার আগেই তাদের প্রত্যেকের পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইন্স্যুরেন্সের কাগজ, রুট পারমিট, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজ জমা দিতে হবে। যেহেতু লরিতে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে, ফলে এখানে বাংলাদেশের বিস্ফোরক আইন প্রযোজ্য হবে। যাত্রা কিংবা ফেরার পথে লরিসংশ্লিষ্টরা সর্বোচ্চ দু’বার যেকোনো জায়গায় বিশ্রাম নিতে পারবেন। এছাড়া, জরুরি প্রয়োজনে ওয়ার্কশপে গাড়ি মেরামত করতেও পারবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে কলকাতা থেকে ত্রিপুরায় ৩৫ হাজার টন চাল পাঠানোর জন্য মানবিক কারণে বাংলাদেশের ভূখ- ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সম্পাদনা: মোরশেদ