কাজী সিরাজ
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, এদেশের রাষ্ট্রনায়ক যার মাধ্যমে বাঙালি জাতির জন্ম, সেই বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে অনেকে কটুক্তি ও বিতর্ক করছে। তাদের বিরুদ্ধে আজ সরকার সোচ্চার হয়ে আইনিপন্থা অবলম্বন করে আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। বিষয়টি এক হিসেবে সাধুবাদ পাওয়ার মতো একটি বিষয়, আরেক দিক থেকে খুব দুঃখের বিষয়। দুঃখের বিষয়টি হচ্ছে, যিনি বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধোত্তর কালে অসহনীয় কষ্ট এবং সর্বপ্রকার কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তার জন্য মানুষের অন্তর থেকেই আলাদাভাবে সম্মান, শ্রদ্ধা, ভক্তি ও ভালোবাসা উৎসারিত হবে। কিন্তু সেটা আজ আমাদের আইন প্রণয়ন করে আদায় করতে হচ্ছে। ফলে এটি দুঃখের বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
দেশের কিছু রাজনৈতিক শক্তি, কিছু ব্যক্তিÑ মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও রাষ্ট্রের মহানায়ককে নিয়ে যে কটুক্তি ও বিতর্ক ছড়াচ্ছে, এটা আসলে অনাকাক্সিক্ষত ও অপ্রত্যাশিত। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশই সম্মান করে। শুধু আমাদের দেশেই তার অসম্মান, কটুক্তি ও বিতর্কের জন্ম দেয়। এটার জন্য আওয়ামী লীগও কিছুটা দায় বহন করে।
বঙ্গবন্ধুকে সার্বজনীন করার মাধ্যমে সকলেই তাকে নিয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছে। যখন প্রয়োজন ছিল এ ধরনের কটুক্তি, বিতর্ক বন্ধ করার তখন আওয়ামী লীগ তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলেই হয়তো আজ এ ধরনের কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। সকলেই জানে বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান ও বিতর্কে জড়িয়ে ফেলা মানেই বাংলাদেশকে অসম্মান ও বিতর্কে জড়ানোর মতো গর্হিত কাজ।
দেশের পরিস্থিতি আজ এমন একটা পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে, স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করার মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে নিয়ে কটুক্তি বন্ধ করতে আইন প্রণয়ন করতে হচ্ছে। কেন আইন করে সম্মান আদায় করতে হবে। কোনো আইন ছাড়াই তার প্রতি বাঙালি জাতির অন্তর থেকেই সম্মান, শ্রদ্ধা, ভক্তি ও ভালোবাসা আসা উচিত। তা না হলে, তাকে অস্বীকার করার মতো কাজ হবে, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
পরিচিতি : সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ : শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন