ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী
ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কটূক্তি করলে এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদ- ও এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ের বিধান রেখে নতুন একটি আইনের যে খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা, এটা আসলে দরকার ছিল, খুবই জরুরি ছিল। কারণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেকসময় আমরা ভুল তথ্য, সম্মানিত নাগরিকদের নিয়ে অশোভন, অবমাননাকর অনেক কিছুই ছড়াতে দেখি। এটা হতে পারে না। আপনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করবেন, তাই বলে যা ইচ্ছা তা করতে, লিখতে পারেন না। অন্যকে অসম্মান করতে পারেন না।
মন্ত্রীসভার নতুন এই আইন অনুমোদন করাটা অনেকেই হয়তো বলবেন, এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে যায়। পক্ষে-বিপক্ষে নানাজনে নানা কথা বলবেন। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির জনক। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি এই স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃতে আমরা স্বাধীনতার লড়াই করে দেশটি পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা, অসম্মানজনক আচরণ কী মেনে নেওয়া যায়?
যারা বাংলাদেশকে স্বীকার করে না, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনককে অসম্মান করে সমাজ-রাষ্ট্রকে অস্থির করে তুলতে চায়, তাদের জন্য এটা খুবই প্রযোজ্য। আপনি এদেশে বাস করবেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অশোভন কথাবার্তা বলবেন, তা হবে না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কেক কাটাও কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে না। এ বছর উনি জন্মদিন পালন করেননি, কারণ সাহস হয়নি। তিনি এবার যদি তার মিথ্যা জন্মদিন পালন করার চেষ্টা করতেন, তাহলে তা প্রতিহত করা হতো। আমরা প্রস্তুত ছিলাম তার ভুয়া জন্মদিন প্রতিহত করার জন্য।
মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আমরা চিরঋণী, তারা আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন নিজের রক্ত ঢেলে। স্বাধীন একটি রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার জন্য আমরা বঙ্গবন্ধুর কাছেও কৃতজ্ঞ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ করে কেন কথা বলা? আমরা যেহেতু স্বাধীনতার পক্ষে এবং স্বাধীনতা মানি, সেহেতু প্রস্তাবিত এই খসড়া আইনটি ঠিক আছে বলেই মনে করি।
পরিচিতি : মুক্তিযোদ্ধা ও ভাস্কর
মতামত গ্রহণ : তানভীন ফাহাদ / সম্পাদনা : জব্বার হোসেন