নূহ-উল-আলম লেনিন
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই স্বাধীন হয়েছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে। মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ নেতৃত্বের প্রধান বলেই আমরা জানি। অনেকে আবার মনে করেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এমন কিছু মন্তব্য আজ আমাদের সমাজে ঘুরপাক খাচ্ছে।
আসলে ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। জিয়াউর রহমান কিন্তু কখনই বলেননি যে তিনি মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার একমাত্র ঘোষক। বঙ্গবন্ধুর পর অনেকেই যুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। যখন, যে জেলা মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন হয়েছে তখনই কেউ না কেউ সেই জেলার স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তবে অনেকেই অনেক সময় বলে থাকেন জিয়াউর রহমান একমাত্র স্বাধীনতার ঘোষক, যারা তাকে ঘোষক বলে তারা প্রকৃত পক্ষে ইতিহাস বিকৃত করতে চান, না হলে তারা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত অথবা তাদের রাজনৈতিক হোক বা ব্যক্তিগতভাবে হোক প্রভাবিত করা হয় এমন বক্তব্য দেওয়ার জন্য। অনেকে আবার বিএনপির ঘরানার রাজনীতিক দল পাল্টে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছেন। তারা তাদের আগের সবকিছু পরিবর্তন করতে পারলেও, তাদের মন-মানসিকতার কোনো পরিবর্তন করতে সক্ষম হননি।
ফরহাদ মজহারের এমন বক্তব্যের মাধ্যমে খুব সহজে বোঝা যায়, তিনি একজন মস্তিষ্ক বিকৃত, আত্মবিকৃত ও তথাকথিত বামদলের একজন মানুষ। তার বক্তব্যকে আমলে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, অনেকে অনেক কিছুই বলেন সব কথায় কান দিলে সমাজ ও বর্তমান রাষ্ট্র তার নিজস্ব গতি হারাতে পারে।
আমরা জানি, একজন মানুষের দুজন জনক থাকে না, ঠিক তেমনি এক বাংলাদেশের স্বাধীনতার ও মুক্তিযুদ্ধের নায়ক দুজন হতে পারে না। জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং তিনি কোনো সেক্টরে নেতৃত্ব দিয়েছেন ঠিকই, তাই বলে তিনি সমগ্র বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হবেন তা নয়। যেখানে জিয়াউর রহমান কোনোদিন নিজে দাবি করেননি, তিনি একমাত্র স্বাধীনতার ঘোষক, তবে কেন এরকম বিভ্রান্তি, বিতর্ক ছড়ানো হচ্ছে। জাতিকে কি বিভক্ত করার কোনো চক্রান্ত চলছে কিনা তা ভাববার সময় এসেছে এখন।
পরিচিতি : উপদেষ্টাম-লীর সদস্য, আওয়ামী লীগ
মতামত গ্রহণ : শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন