‘স্করপিনের তথ্য ফাঁস ভারতের ক্ষতির কারণ হতে পারে’
লিহান লিমা: অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’ এ ভারতের স্করপিন সাবমেরিনের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন সাংবাদিক ক্যামেরন স্টুয়ার্ট। সূত্র: দ্য হিন্দু
গতকাল বুধবার দ্য হিন্দুর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ক্যামেরুন স্টুয়ার্ট বলেন, ২০ হাজার নথির এ গোপন তথ্যগুলো যদি কোনোভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তির কাছে চলে যায় তাহলে ভারতকে এই ব্যয়বহুল ও আধুনিক সাবমেরিন প্রকল্প নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।
কড়া নিরাপত্তার এই সাবমেরিন নির্মাণ প্রকল্পের গোপন তথ্য প্রকাশ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১১ সালে ফ্রান্সের ডিসিএনএস-এর একজন কর্মীর কাছ থেকে আমি এই তথ্য পাই। তবে স্বাধীনভাবে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করার কোনো উপায় ছিল না।
ডিসিএনএস-এর একজন কর্মী এসব তথ্য দক্ষিণ এশিয়ায় নিয়ে আসে। সে এগুলো কাউকে দেয়নি। সম্ভবত সে তার বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে চেয়েছিল। পরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এসব তথ্য পেয়ে যায়। এরপর এগুলো অন্য আর একটি দেশে পাঠানো হয়। এগুলোর একটা অংশ অস্ট্রেলিয়ায় পাঠনো হয়, কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখেই। তবে এই কথাগুলোর মধ্যে অনেক ফাঁক-ফোকর আছে। কিন্তু আমি কখনই বিশ্বাস করি না এটি ভারত থেকে ফাঁস হয়েছে, এটি ফ্রান্স থেকে ফাঁস হয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত গোপন তথ্য প্রকাশ সম্পর্কে ক্যামেরন স্টুয়ার্ট বলেন, এটি নির্ভর করবে তথ্য কার কাছে আছে। আমি মনে করি এই তথ্যগুলো মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশাল পরিমাণ এই তথ্যে সাবমেরিনের প্রতিটি ইঞ্চির খবর আছে। যে তথ্য কোনো নৌ-বাহিনী জনসম্মুখে আসার কথা কখনো কল্পনাও করতে পারে না। যদি এই তথ্যগুলো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ বা কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বীদের হাতে যায়, আমি জানি না ক্ষতির পরিমাণ কতটা হতে পারে। আর, প্রতিপক্ষের কাছে এই তথ্য না পৌঁছলে আতঙ্কের কারণ নেই।
ডিসিএনএস বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করে থাকে। সম্প্রতি এটি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও সাবমেরিন নির্মাণের চুক্তি করেছে। ভারতীয় সাবমেরিনের তথ্য প্রকাশের পেছনে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে সন্দেহ করা হচ্ছে, এ সম্পর্কে দ্য হিন্দুর এক প্রশ্নের জবাবে ক্যামেরন বলেন, ফ্রান্স, জাপান, জার্মানি এবং অস্ট্রেলিয়া সাবমেরিন নির্মাণে প্রতিযোগী দেশ। তবে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এ কাজ করা হয়েছে, এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ আমার কাছে নেই। আমি এটি সম্পর্কে কিছু জানি না। কোনো প্রতিপক্ষ নাশকতা সৃষ্টির জন্য ফরাসি কোম্পানিকে বাছাই করেছে কি-না, সে সম্পর্কেও আমার কাছে কোনো প্রমাণ নেই। তবে এমনটা হতে পারে ।
ভারতীয় সাবমেরিনের তথ্য ফাঁসের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ক্যামেরন বলেন, অস্ট্রেলিয়াসহ অনেকেই এ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী তার দেশের সাবমেরিনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার কথা বলেছেন। তবে, অস্ট্রেলিয়ান সাবমেরিন প্রকল্প নিরাপদে আছে বলে উল্লেখ করেছে ডিসিএনএস। প্রশ্ন হলো, ভারতের গোপনীয়তা ফাঁস হলে, অস্ট্রেলিয়ার বেলায় তা হবে না কেন? ক্যামেরুন বলেন, আমি মনে করি এই প্রশ্নটা সবার জন্য জরুরি। সম্পাদনা: রাশিদ রিয়াজ