বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করবে না আমেরিকা
লিহান লিমা: পাকিস্তানে বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার মার্কিন প্রশাসন একথা জানায়। ডন
এর আগে এক বিবৃতিতে মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনকে জানায়, পাকিস্তানের বেলুচ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত অঞ্চল বেলুচিস্তান এবং ভারতের প্রভাব সম্পর্কে এটি দূরত্ব বজায় রাখবে। কিন্তু বুধবার অন্য আরেক বিবৃতিকে মার্কিন প্রশাসন জানায়, বেলুচিস্তান বিষয়ে পাকিস্তানিদের যে ভঙ্গি এবং অস্পষ্টতা তা পাকিস্তানের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার পাকিস্তানের অখ-তা এবং আঞ্চলিক সমন্বয়ের প্রতি বিশ্বাসী। তাই আমরা কখনই বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি না।
তবে তারা বেলুচিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমরা চাই পাকিস্তানের সকল রাজনৈতিক দল তাদের মতপার্থক্য ভুলে রাজনৈতিক শান্তি আনয়নের জন্য কাজ করবে।
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেলুচিস্তানের জনগণের উপর তার সমর্থন ব্যক্ত করার পর পাকিস্তান এটিকে তাদের দেশকে বিচ্ছিন্ন করার যড়যন্ত্র উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানায়। বলা হয়, মোদি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ জাগিয়ে তুলছেন এবং অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছেন। পাকিস্তান প্রশাসন এবং গণমাধ্যম আরও জানায়, মোদি ভারত অধ্যুষিত কাশ্মীরে সহিংসতা ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর দ্বারা বেলুচিস্তানের আন্দোলন উস্কে দেওয়ার ঘটনাকে চাপা দিতে চাইছেন।
পাকিস্তান জানায়, কাশ্মীর সমস্যা একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু এবং জাতিসংঘ কাশ্মীর ব্যাপারে যেকোনো সিদ্ধান্ত কাশ্মীরের জনগণের অধিকার বলে উল্লেখ করে। কিন্তু ভারত বেলুচিস্তানের বিষয়কে আন্তর্জাতিক ইস্যু বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশ সরকার এবং আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সমর্থন আদায় করে। বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ভারত সফর কালে বেলুচিস্তানের বিষয়ে মোদির পাশে থাকার কথা ব্যক্ত করেন এবং শিগগিরই বাংলাদেশ বেলুচিস্তানবিষয়ক নীতি ঘোষণা করবে বলে জানান। পাকিস্তান ইসলামাবাদের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে জানায়, এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে তারা সুস্পষ্ট অবস্থান উল্লেখ করতে হবে।
এর আগে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মার্ক টোনার বলেন, বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ভারত-পাকিস্তান সুসম্পর্ক জরুরি। দিল্লি-ইসলামাবাদ আলোচনায় যে কোনো সহাযোগিতা করতে আমেরিকা প্রস্তুত। এ সময় টোয়েন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জম্মু-কাশ্মীর ও বেঙ্গালুরু সম্পর্কে বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশের জনগণ মত প্রকাশ এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার রাখে।
পাকিস্তান বিভিন্ন প্রদেশে ধর্মীয় এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীগোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আসছে। আন্তর্জাতিক পরিদর্শকরা জানায়, এসব ধর্মীয় এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীগোষ্ঠী বেলুচিস্তানে সহিসংতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত। সম্পাদনা: রাশিদ রিয়াজ