নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় অপহরণ ও বেআইনি গ্রেফতার চলছে বাংলাদেশে
ডেস্ক রিপোর্ট : অব্যাহতভাবে বেআইনী আটক ও গুম বাংলাদেশে এক অপকৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা যে কারো জন্যে এমনকি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকেও মোকাবিলার জন্যে হুমকি স্বরুপ। এধরনের চর্চা যথাযথ প্রক্রিয়ার লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশের আইনের প্রতি উপহাস।
চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৫ হাজার মানুষকে আটক করা হয়। জঙ্গিবিরোধী অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। জঙ্গিরা বাংলাদেশের লেখক, সমকামী, বিদেশি নাগরিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু ৪০ জনকে হত্যা করে। ওই অভিযানে সত্যিকার দোষীরা গ্রেফতার হয়নি। গ্রেফতার হয়েছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকেরা। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে হাজার হাজার গ্রেফতারের মধ্যে মাত্র ১৯৪ জন জঙ্গি রয়েছে। একই কারণে জুনে বন্দুক যুদ্ধে ২২ জন হত্যার শিকার হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে। ভিকটিমদের মধ্যে দুইজন বিরোধী দলের ছাত্র শাখার শিক্ষার্থীও ছিল।
বাংলাদেশে বেআইনিভাবে গ্রেফতার ও অপহরণ নিয়মিতই হচ্ছে। কর্র্তৃপক্ষের এমন আচরণ আন্তর্জাতিকভাবেও আলোচিত হয়েছে। ১ জুলাই ঢাকার রেস্তোরাঁয় সন্দেহভাজন হামলাকারী তাহমিদ খান ও হাসনাত করিম অপহরণ হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ পরে তাদের গ্রেফতার দেখিয়েছে।
পুলিশ বলছে দুইজন তাদের কাস্টডিতে আছে। তবে রেস্তোরাঁয় হামলার সঙ্গে তাদের কারো সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান তারা। চলতি মাসের শুরুতে মির আহমেদ বিন কাসিম ও হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে অপহরণ করা হয়েছে। সাদা পোশাকে হুম্মাম কাদেরকে তার গাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়। আর মির আহমেদকে তার বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
তবে তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা দুইজনই বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতার সন্তান। রাজনৈতিক কারণেই তাদের অপহরণ করা হয়েছে।
নির্দিষ্ট অভিযোগ ও ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ ছাড়া গ্রেফতারের আইন পরিবর্তন করা সত্ত্বেও সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে গ্রেফতার করা হচ্ছে। যে পুলিশ ও গোয়েন্দারা এই নির্দেশ অমান্য করছে তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। তাতে দায় মুক্তির সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। যেখানে বাংলাদেশ সরকার জঙ্গিদের হুমকির মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে সেখানে আইনের শাসনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনাও গুরুত্বপূর্ণ। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ
নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়, অনুবাদ: এম রবিউল্লাহ