কারাবন্দিদের জরিমানা আদায় সংশোধন হচ্ছে শত বছরের জেল কোড
এস এম নূর মোহাম্মদ : সংশোধন হচ্ছে কারাবন্দিদের জরিমানা আদায়ের ১৮৮০ সালের বিধান। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে জেল কোডের শত বছরেরও বেশি সময়ের পুরনো এই নিয়ম সংশোধন করতে কাজ করছে সুপ্রিম কোর্ট। আর এজন্য সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ পাঠাবে প্রধান বিচারপতির কাছে। এরপরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন প্রধান বিচারপতি।
পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন। এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসাবে রয়েছেন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (অর্থ ও উন্নয়ন) মো. যাবিদ হোসেন, স্পেশাল অফিসার বেগম হোসনে আরা আক্তার, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (সার্বিক) এস.এম. এরশাদুল আলম, ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) মো. আজিজুল হক এবং সহকারী রেজিস্ট্রার (অর্থ) মো. ইসমাইল হোসন।
এর আগে ১৮৮০ সালের এই নিয়ম সংশোধন করতে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. ইকবাল হাসান ও কাশেমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেলসুপার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।
জরিমানা আদায় সংক্রান্ত হাইকোর্ট বিভাগের ৯ ফেব্রুয়ারি ১৮৮০ সালের নির্দেশনা অনুযায়ী কারাবিধির ৫৩৩ ধারায় বলা আছে, ‘কারা তত্ত্বাবধায়ক অথবা কারা পরিদর্শক জরিমানার অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে কারা কর্তৃপক্ষ জরিমানা প্রদানের জন্য কারাবন্দির প্রতিনিধি বা আত্মীয়স্বজনকে জরিমানার নির্দেশ প্রদানকারী আদালতে পাঠাবেন।’
রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, কারাবন্দিরা সাধারণত আগে কারাদ- ভোগ করেন এবং কারাদ- উত্তীর্ণ হওয়ার কাছাকাছি সময়ে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেন। কিন্তু সাজাপ্রাপ্ত অধিকাংশ বন্দির প্রতিনিধি বা আত্মীয়স্বজন আদালতে গিয়ে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করা কঠিন হয়। অনেক সময় আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হয়। আবার কখনো মামলার নথি খোঁজে পাওয়া যায় না। এতে অনেক সময়ই জরিমানা আদায় করা সম্ভব হয় না।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও বন্দিরা অনেক সময় জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে না পেরে কারাদ- ভোগ করেন। এতে কারাবাস দীর্ঘায়িত হয়। এর ফলে কারাগারের জায়গা খালি হতে সময় লাগে এবং সরকারেরও ব্যয় বাড়ে। তাই বিষয়টি সহজ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
তবে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গাজীপুরের কাশেমপুর কারাগার পরিদর্শনে গেলে তখনই তাকে বিষয়টি অবহিত করেছিল কারাকর্তৃপক্ষ। সেই ধারাবাহিকতায়ই এই চিঠি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ এ প্রতিবেদককে বলেন, একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। জনগণের স্বার্থে জরিমানা আদায়ের বিষয়টি সহজ করার জন্য কমিটি কাজ করছে। তাদের সুপারিশের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্পাদনা: আ. হাকিম