খরা মৌসুমে লোনাপানি গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলে আসে : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ফারাক্কা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ নদী কমিশনকে
বিশ্বজিৎ দত্ত: ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে এবার সরব হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। গতকালই নদী কমিশনকে ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহম্মদ নজরুল ইসলাম (বীর প্রতীক) বলেছেন, ফারাক্কা বাঁধের বিষয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য ভারতের কাছে উপস্থাপন করার জন্যই রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশ শুধু নয় ভারতের ৮৫ কিলোমিটার এলাকাও পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। সেখানকার জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। স্বাভাবিক গতিপথের একটি নদীকে বাঁধ দিলে তা অবশ্যই ক্ষতিকর। এ বাঁধের ফলে বাংলাদেশের পদ্মা ও তার সংলগ্ন নদীগুলো খরা মৌসুমে শুকিয়ে যায়। বাংলাদেশ মরুকরণের দিকে চলে যাচ্ছে। নদীগুলোতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় খরা মৌসুমে সমুদ্রের লোনা পানি গোপালগঞ্জ পর্যন্তও চলে আসে। ভারতের বিহারে শুধু বন্যাই নয়,পশ্চিমবঙ্গেরও অনেক গ্রাম ও মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফারাক্কা বাঁধের কারণে। আমরা যে রিপোর্টটি তৈরি করছি, তাতে উভয় দেশের বাস্তবতাই তুলে ধরা হবে। আমরা যেমন শুকাচ্ছি। তারাও ভেসে যাচ্ছে ও শুকাচ্ছে। সুতরাং গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে আমরা যাতে উভয়েই লাভবান হতে পারি এই রিপোর্টে তা তুলে ধরা হবে।
উজানে ফারাক্কা থাকায় ভাটিতে গঙ্গা ব্যারেজ করার একটি পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। চীন ও জাপান উভয় দেশই এই বাঁধ নির্মাণে সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, পদ্মা নদীর দুই পাড় বেঁধে দিয়ে এ ব্যারেজ করা হবে। ব্যারেজের দৈর্ঘ্য হবে ২ দশমিক ১ কিলোমিটার। যদি ফারাক্কা খুলে দেয় তবে গঙ্গা ব্যারেজ নিয়েও ভাবতে হবে।
গত সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার বিহারের বন্যা নিয়ে একটি বৈঠক করেন। সেখানে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ফরাক্কা বাঁধটাই যত নষ্টের গোড়া। ওর জন্যই বন্যার কবলে পড়ে বিহার। তাই ফরাক্কা বাঁধকে একেবারে ভেঙে ফেলার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এ প্রস্তাব বিবেচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল ফারাক্কায় পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অন্যদিকে, ভারতের দৈনিক আনন্দবাজার জানিয়েছে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির মুখে পশ্চিমবঙ্গও পাল্টা ‘ডসিয়ের’ তৈরি করে নিজেদের বক্তব্য কেন্দ্রের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি