বাবার কাছে হজ করার প্রেরণা পাই
আমার বাবা মাওলানা মমতাজ উদ্দীন আহমেদ। তিনি পাকিস্তান আমলে সর্বপ্রথম হজ করেন। তখন জাহাজে করে মানুষ হজে যেতো। এতে সময় লাগতো যেমন অনেক, তেমন পাড়ি দিতে হতো অনেক দেশ। বাবা হজ থেকে ফিরে অনেক স্মৃতিচারণ করলেন। যেমনÑ জাহাজে করে যাওয়ার পথে মালয়েশিয়াতে একবার ঝড়ের কবলে পড়লেন। প্রচ- ঝড়। সেই সাথে বৃষ্টি। দুইদিন একটানা বৃষ্টি। থামার কোনো লক্ষণ নেই। তখন তারা আল্লাহর কাছে এই বলে প্রার্থনা করলেন, হে আল্লাহ! আমরা তোমার মেহমান। তোমার ঘরের যাত্রী। তোমার রাসুলের জিয়ারত প্রত্যাশী। তুমি আমাদের এই ঝড়ের কবল থেকে রক্ষা করো। এরপর দেখতে পেলেন, বাবার জাহাজ যেদিক দিয়ে যাচ্ছে সেদিকে কোনো ঢেউ, বাতাস, ঝড়-তুফান কিছুই নেই। তখন বাবা বললেন, হজের সফরে গেলে আল্লাহ মানুষকে হেফাজত করেন। নিরাপদে পৌঁছে দেন। বাবার কাছ থেকেই আমি সর্বপ্রথম হজ করার প্রেরণা পাই। বিশেষত হজে যাওয়ার জন্য আমাদের ছয় ভাই-বোনকে বাবা খুব বেশি উদ্বুদ্ধ করেছেন।
আমি সর্বপ্রথম হজে যাই ১৯৭৫ সালে। তারপর ১৯৮৮ সালে আমি কিছুদিনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হই। তখন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ছিলো রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে। এরশাদ সাহেব ছিলেন রাষ্ট্রপতি। তখন শুকরিয়া স্বরূপ আমি পবিত্র হজ পালনে যাই। হজে গেলে তখনকার সৌদি বাদশাহ আমাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত করেন। নবীর দেশের মানুষের সম্মান পেয়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এখনও সে দিনের কথা মনে হলে আনন্দ পাই।
সর্বশেষ ম্যাডামের (বেগম খালেদা জিয়া) সফরসঙ্গী হয়ে ওমরায় গেলাম। তখন আমার কাছে সবচেয়ে নিরাপদ ও শান্তিময় জায়গা মনে হয়েছে মক্কা-মদিনা শহর। আমি একা একাই রাস্তায় বিচরণ করেছি। ঘুরে বেড়িয়েছি। যেটা আমাদের দেশে কল্পনা করাও মুশকিল।
শ্রুতি লিখন: আমিন ইকবাল