ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে ড. ইউনূসের অনুদান যাচাই করবে এনবিআর
বিশ্বজিৎ দত্ত : ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুদানের বিষয়টি যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান জানান, ড. ইউনূস যদি বিদেশে অর্জিত আয় কাউকে অনুদান দেন, সেটি তার আয়কর রিটার্নে থাকতে হবে। আর দান করারও কিছু নিয়ম রয়েছে। সেটি যদি প্রতিপালিত না হয়, তবে তিনি অবশ্যই অভিযুক্ত হবেন। সেক্ষেত্রে আয়কর আইনে প্রয়োজন মনে হলে তথ্য গোপন ও মানিলন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান আইনজীবী খুরশিদ আলম বলেন, ‘ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে ড. ইউনূস কীভাবে অনুদান দিয়েছেন, তা দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত করে দেখা উচিত। ড. ইউনূস মানিলন্ডারিং করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘তিনি (ইউনূস) কিভাবে এ অনুদান দিয়েছেন, কিভাবে দেশের বাইরে টাকা নিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছিল কিনা, বিষয়গুলো পরিষ্কার হওয়া উচিত। যদি বিদেশে অর্জিত আয় থেকেও তিনি অর্থ দিয়ে থাকেন, তবে এ অর্থ তিনি কিভাবে অর্জন করেছেন, ব্যক্তিগতভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের অর্থ তিনি দিতে পারেন কিনা, তার আয়কর রিটার্নে এসব বিষয় উল্লেখ রয়েছে কিনা, বিষয়গুলো পরিষ্কার হওয়া দরকার। এভাবে অনুদান দেওয়াও আসলে অর্থপাচার।’
খুরশিদ আলম বলেন, ‘গত তিনদিন আগে বিবিসি বাংলায় ড. ইউনূসের অনুদানের বিষয়টি প্রচার হয়। এরপর ড. ইউনূসের তরফ থেকেও এ বিষয়টি পরিষ্কার করা হচ্ছে না।’
এ আইনজীবী বলেন, ‘তিনি নোবেল পেয়েছেন এটি অবশ্যই গৌরবের। তার মানে এই নয় যে, তিনি সকল আইনের ঊর্ধ্বে। তাকেই এ অনুদান দেওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে হবে। আমি দুদককেও অনুরোধ করব, বিষয়টি তল্লাশি করে দেখার জন্য।’
বিবিসিতে প্রচারিত সংবাদে বলা হয়, হিলারি ক্লিনটন পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে তার সঙ্গে যারা ব্যক্তিগত কারণে দেখা করেছেন, তাদের অর্ধেক ব্যক্তি নিজে বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে অনুদান দিয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসও। এপির তথ্য অনুযায়ী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে তিনবার দেখা করেছেন বাংলাদেশের নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস এবং টেলিফোনে কয়েকবার কথা বলেছেন। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের দায়িত্ব থেকে মুহাম্মদ ইউনূসকে পদত্যাগে সরকার চাপ দিচ্ছিল। সে কারণে হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে দেখা করে সাহায্য চেয়েছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস। তাকে সাহায্য করার কোনো পন্থা খুঁজে বের করতে সহকারীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন।
এপি বলেছে, গ্রামীণ আমেরিকা, যে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন ইউনূস, ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে এক লাখ থেকে আড়াই লাখ ডলার অনুদান দিয়েছে। গ্রামীণ রিসার্চ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান, যেটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও রয়েছেন ইউনূস, সেই প্রতিষ্ঠান থেকেও ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার অনুদান দেওয়া হয়েছে। সম্পাদনা: মোরশেদ