থানা শিক্ষা কর্মকর্তার নামে ভুয়া চিঠি বিতরণ সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে চলছে পিস স্কুল!
নাঈমুল হাসান, টঙ্গী (গাজীপুর) : সারা দেশের পিস স্কুল বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারের নির্দেশের তোয়াক্কা না করে টঙ্গীতে একটি মহল চালিয়ে যাচ্ছে তাদের পিস স্কুলের কার্যক্রম। শুধু তাই নয়, টঙ্গী থানা শিক্ষা অফিসের বরাত দিয়ে গত ৯ আগস্ট সকল অভিভাবকের কাছে লিখিত চিঠিও পাঠানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। সন্তানকে অন্যত্র সড়িয়ে না নিতে অনুরোধ করা হয় এতে। এছাড়া কেউ গুঞ্জন ছড়িয়ে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় ওই চিঠিতে।
২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত জেএসসি পরীক্ষায় ফেল করা বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে শতভাগ পাসের আশ্বাস দিয়ে ভর্তি করা হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। তবে বছরের চলতি মাসে একই শ্রেণিতে দুই বছর পড়তে হবে বলে একটি নোটিশ করে স্কুলটির কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবম শ্রেণিতে (জেএসসিতে ফেল করা) ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, ভর্তির সময় বলা হয়েছিল এসএসসির রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা হবে না। এখন এক বছর নবম শ্রেণিতে সময় নষ্ট করা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ এখন বলছে আবারও জেএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে হবে, এছাড়া রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হবে না।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টঙ্গীর গুটিয়ায় জনৈক ফারুক মিয়া ওরফে পারুল হাজীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে শুরু হয় পিস মেমোরিয়াল স্কুলের কার্যক্রম। শুরুর দিকে শিক্ষার্থী সঙ্কট চরম হওয়ায় ভর্তি ফি এবং বেতন না নেওয়ার কথা বলেও শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। এছাড়া স্কুলটিতে প্রয়োজনীয় মাঠ না থাকায় খেলাধুলার সুযোগ নেই। এতে মেধা বিকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এখানকার শিক্ষার্থীরা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পড়া-লেখার মান নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন থাকলেও এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজনকে ম্যানেজ করে চলছে এ প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক দেওয়ান মো. হাসান বলেন, স্কুলের সকল বিষয়ে থানা শিক্ষা অফিসার অবগত আছেন। তবে স্কুলটির কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মো.জালাল মিয়া সকল অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছি।
তবে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন রয়েছে কি না এবং ভুয়া চিঠির ব্যাপারে জানতে চাইলে টঙ্গী থানা শিক্ষা অফিসার ফরিদা আক্তার লুনা (মুঠোফোনে) আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, পিস স্কুলটির ব্যাপারে আমি শুনেছি। থানা শিক্ষা অফিস থেকে কোনো চিঠি পাঠানো হয়নি। তিনি বলেন, ঘটনা শুনার পরই আমি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বলেছি দুই দিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি