গৌতম চক্রবর্তী : অন্য ধর্মগুরুদের মতো আচারবিচারের নির্দেশ দিয়েই থামেন না গৌতম বুদ্ধ। সেটির পিছনে কার্যকারণের দর্শন খোঁজেন। রাজগৃহের গৃধ্রকূট পর্বতে বহু জৈন তপস্বী খর রোদে দাঁড়িয়ে তপস্যা করতেন। পূর্বজন্মের পাপ কৃচ্ছ্রসাধনে ধবংস করছেন তারা। গৌতম জিজ্ঞেস করেছিলেন, পূর্বজন্মে তোমরা কী ছিলে? কেমন পাপ করেছিলে? পাপের কতটা নষ্ট হয়েছে, কতটা বাকি আছে? তারা জবাব দিতে পারেননি। পাপকর্ম আর করবেন না, এটুকুই জানেন। গৌতম জানালেন অনন্য এক দার্শনিক সিদ্ধান্ত, ‘কর্মমাত্রেই খারাপ নয়। কর্ম মানে মানসিক উদ্দেশ্য।’ হিংসা, চুরি, ব্যাভিচার যদি কুকর্ম হয়, তার বিপরীতে অবিহিংসা, চুরি না করা, অব্যাভিচারের মতো সুকর্মও আছে। কর্ম মানে মানসিক উদ্দেশ্য কথাটা এরপর মহাকাব্য থেকে হিন্দু নিয়ম, সবেতে ঢুকে পড়বে। মাংসবিক্রেতা ব্যাধও ঋষিকে ধর্ম শিখিয়ে দেবে।
পা-বেরা যতই রাজসূয় ও অশ্বমেধ যজ্ঞ করুন, অনুশাসনপর্বে মহাভারত জানাবে, একশো বছর ধরে ফি মাসে অশ্বমেধ যজ্ঞের যে ফল, মাংসাহার ত্যাগ করলেও সে ফল। মনুসংহিতা বলবে : পরদ্রব্যের অভিলাষ, কুপথ অবলম্বন, অন্যের অনিষ্টচিন্তাÑ এই তিন রকম মানসিক কর্মই পাপ।