• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

মিনি কলাম

উপাসনা

প্রকাশের সময় : August 27, 2016, 12:00 am

আপডেট সময় : August 26, 2016 at 9:12 pm

বিনয় ভূষন জয়ধর : ‘উপাসনা’ শব্দটি সংস্কৃত, ‘উপসমীপে আসন’Ñ অর্থাৎ উপ-আস্+অন্ (স্ত্রী আ) এই তিন অংশ। ‘উপ’ উপসর্গে, আস উপবেশনে, অন্ প্রত্যয় যোগে ‘উপাসনা’।

মানব মননশীল। মানবের মনে অনেক কামনা-বাসনা বিদ্যমান। মনের এই নিম্নমুখী বেগকে অশুদ্ধ মন বলা হয় এবং কামনা-বাসনা বিমুক্ত মনের ঊর্ধ্ব বেগকে বিশুদ্ধ মন বলা হয়। মনই হলো বন্ধন এবং মুক্তির কারণ। অনিত্য বিষয় বাসনা বিজড়িত মনই বন্ধন কারক। অনিত্য বিষয় বাসনা বিমুক্ত মন বা নিত্যমুখী মনই মুক্তি প্রদায়ক। এই অনিত্য বিষয় আসক্ত মনকে বিষয় বিমুক্ত করবার নিমিত্তই উপাসনা বা আরাধনা মানব জীবনে একান্ত প্রয়োজন। সমস্ত রকমের উপাসনার উদ্দেশ্যই হলো মনকে বিশুদ্ধ বা নির্মল করা। সমস্ত রকমের কামনা-বাসনার মূল হলো অজ্ঞান বা ভ্রান্তি। মনের ভ্রান্তিনাশের নিমিত্তই উপাসনা মানব জীবনে অবধারিত। কায়-মন-বাক্যে অন্তঃকরণের সমূহ বৃত্তিকে ভগবৎমুখী করে তুলতে হবে। যেন তৈলধারার ন্যায় চিত্তবৃত্তিসমূহ উপাস্যে সতত প্রবাহিত হয়। এই উপাসনা দেশ-কাল-পাত্র ভেদে অনেক প্রকার হতে পারে, কিন্তু উপাস্য সর্বকালেই এক, বহু কখনই নয়। সর্বদেশে, সর্বকালে ওই একই সচ্চিদানন্দ পরমেশ্বর বহুরূপে, বহুনামে উপাসিত হচ্ছেন। সুতরাং দেশ, কাল ও পাত্র ভেদে অনুষ্ঠানগত ও আচারগত ভেদ পরিলক্ষিত হলেও উপাস্য ওই একই সচ্চিদানন্দ পরমেশ্বর।

প্রতিটি মানবের আপন প্রকৃতিগত সংস্কার বা স্বভাব বিদ্যমান। মানবের ওই স্বভাবই হলো মানবের বৈশিষ্ট্য। ওই স্বভাব বা বৈশিষ্ট্য মানবের পূর্ব হতেই সহজাতক্রমে তার প্রকৃতিতে বিদ্যমান থাকে। স্বভাব-নির্দিষ্ট কর্মের দ্বারা ওই বৈশিষ্ট্যকে রক্ষা করে তার বিকাশ করাই হলো সাধনা। সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ এই ত্রিগুণ মানব প্রকৃতিতে বিদ্যমান। আর গুণের তারতম্য অনুসারে মানব প্রকৃতিতে স্বভাবের বৈচিত্র্য বিদ্যমান। এই কারণে আপন আপন প্রকৃতিগত স্বভাব অনুযায়ী সংসারে অনেক প্রকার উপাসনাগত ভেদ দেখতে পাওয়া যায়। সুতরাং আচার-অনুষ্ঠানগত ভেদ, অধিকারী বিশেষে ভেদরূপে পরিলক্ষিত হয়। অতএব আমরা নিশ্চিত হলামÑ সমস্ত উপাসনার উদ্দেশ্য বা পরম লক্ষ্য হলো ঈশ্বর উপলব্ধি। যতক্ষণ পর্যন্ত আত্ম-অনুভব বা পরমেশ্বরের বোধ না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত চিত্তশুদ্ধির হেতু বা অবিদ্যানাশের জন্য মানবের কর্ম ও উপাসনা একান্ত প্রয়োজন বা আবশ্যক। এই উপাসনা আবার অধিকারী বিশেষ ধ্যান, জ্ঞান, প্রেম, কর্ম ইত্যাদি বৈচিত্র্যে পরিলক্ষিত হয়। যার সদ্গুরুর প্রতি অটুট শ্রদ্ধা এবং সাধনার প্রতি নিষ্ঠা আছে, তার অতি শীঘ্রই সাধনায় সিদ্ধিলাভ হয়।

কে কি বলল, কার কি হলোÑ এইরূপ ভাবনায় বিচলিত না হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে একাগ্রচিত্তে আপন সাধনা করতে হবে। তাহলে ভগবৎ কৃপায় অতি শীঘ্রই সিদ্ধিলাভ করা যায়। তাই সাধনায় প্রথমত প্রয়োজন শ্রদ্ধা, দ্বিতীয়ত ধৈর্য এবং তৃতীয়ত অনুরাগ বা ব্যাকুলতা। এগুলো সাধকের জীবনে একান্ত প্রয়োজন।

প্রতিটি জীবন সচ্চিদানন্দ পরমাত্মার প্রকাশ। প্রত্যেক জীবনে রয়েছে আধ্যাত্মিক রহস্য বা সেই তত্ত্ব। সুতরাং ওই পরম সত্য প্রত্যেককেই অনুভব করতে হবে। পরমাত্মার প্রকাশের জন্য মানবজীবন লাভ হয়েছে। তার প্রতি অনুরাগ আসবার জন্য দেহে প্রাণ এসেছে। তাকে মনন করবার জন্য মানসিক বল এবং তাকে চিন্তা করবার জন্য বুদ্ধি আর তার উপলব্ধির জন্য এই আনন্দময় তনু বা দুর্লভ মানবজীবন লাভ হয়েছে।

সৎসঙ্গ বা সাধুসঙ্গ না করলে বিবেক জাগ্রত হয় না আর বিবেক জাগ্রত না হলে বৈরাগ্য আসে না এবং বৈরাগ্য না এলে সত্যনিষ্ঠা ও সত্যলাভ হয় না। ভাব ও অভাবের অধিষ্ঠান হলো মানবের স্বভাব। এই স্বভাবই হলোÑ মানবজীবনের বৈশিষ্ট্য। অভাব হতে স্বভাবে এবং স্বভাব হতে মহাভাবে মানবকে উত্তরণ করাই হলো উপাসনার লক্ষ্য।

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01708156820

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)