আন্তর্জাতিক ডেস্ক: স্করপেন সাবমেরিনের গোপন তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে ফ্রান্সকে তদন্ত করার অনুরোধ করল মোদি সরকার। একইসঙ্গে ওই নির্মীয়মাণ সাবমেরিনের মূল প্রস্তুতকারক ফরাসি সংস্থা ডিসিএনএসের কাছেও এই তথ্য ফাঁস নিয়ে জবাবদিহি চেয়েছে কেন্দ্র। তবে এখনও পর্যন্ত যে গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে, তাতে বড়সড় নিরাপত্তার কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি বলেই সরকারিভাবে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে কেন্দ্র।
ফাঁস হওয়া তথ্য আসল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’ নামে যে পত্রিকা এ গোপন তথ্য প্রকাশ করেছে, সেখানে ওই সাবমেরিনের অনেক কিছুই সামনে আসেনি। তথ্য ফাঁস হওয়ার পিছনে চীনের সংস্থা ‘শ্যাডো নেটওয়ার্কে’র কোনো ভূমিকা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে ভারত। শ্যাডো নেটওয়ার্ক নামে ওই সংস্থা ভারত সরকারের গোপন, স্পর্শকাতর তথ্যের উপর কম্পিউটারি কারিগরিতে চরবৃত্তি করে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে ২০১০ সালের যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার কিছু বিশেষজ্ঞ ভারতকে সতর্ক করেছিল বলেও খবর। তাই তারাও যে স্করপেন সাবমেরিনের তথ্য হ্যাক করেনি, এ তথ্যও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্র। বর্তমান
নির্মীয়মাণ সাবমেরিনের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া ভারতের কাছে যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্করকে ডেকে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যোগাযোগ করতে বলেছেন মোদি।
৬৬ মিটার লম্বা ওই সাবমেরিন জলের ৩০০ মিটার পর্যন্ত গভীরে চলাচল করতে পারবে। কিন্তু যাবতীয় সাজে সেজে ‘শত্রু’দেশের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য তৈরি হওয়ার আগেই এভাবে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় দেশের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের কাছে এ মুহূর্তে ১৪টি কার্যকরী সাবমেরিন রয়েছে। যার মধ্যে ‘চক্র’ নামে যে একটি মাত্র নিউক্লিয়ার শক্তির সাবমেরিন রয়েছে, তা রাশিয়া থেকে লিজে নেওয়া। তবে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে মিসাইলসহ তিনটি নিউক্লিয়ার শক্তির সাবমেরিন তৈরি করছে ভারত। ‘আইএনএস আরিহন্ত’ নামে যার প্রথমটি অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তম ডকে তৈরিও হয়েছে।
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার সরকারিভাবে জানিয়েছে, নৌবাহিনী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞরা অস্ট্রেলিয়ার ওই কাগজে প্রকাশিত রিপোর্ট যেমন খতিয়ে দেখছে, একইভাবে প্রকাশিত তথ্য ভারতের নিরাপত্তার ওপর কতটা আঘাত আনতে পারে, তার পর্যালোচনা করছে। ভারতীয় নৌবাহিনী ইতোমধ্যেই ফরাসি সরকারের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত সংস্থার ডিজির সঙ্গে কথা বলেছে। বিষয়টি নিয়ে আপদকালীন ভিত্তিতে তদন্ত করার অনুরোধ করা হয়েছে। তদন্তে যা পাওয়া যাবে, তা ভারতকে জানানোর জন্যও বলা হয়েছে। সম্পাদনা: ইমরুল শাহেদ