মারা যাওয়ার একযুগ পরও কালা জাহাঙ্গির পুলিশের ওয়েবসাইটে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’!
আজাদ হোসেন সুমন : রাজধানীর অপরাধ জগতের এককালের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারকারী সরকারের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গিরকে আরেক টপ টেরর পিচ্চি হান্নান ও কালু গুলি করে হত্যা করে প্রায় এক যুগ আগে। কিন্তু পুলিশের ‘মোস্টওয়ান্টেড’ তালিকার এক নম্বরে কালা জাহাঙ্গিরের নামটি এখনো রয়ে গেছে। সঙ্গত কারণেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কালা জাহাঙ্গির নিহত হওয়ার বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকি অবগত নয়? নাকি জেনেও তারা উদাসীন রয়েছে?
পুলিশের ওয়েবসাইটে ওয়ান্টেড তালিকার এক নম্বর কালা জাহাঙ্গির। বাবার নাম গোলাম রসুল, গ্রাম বনানীগাঁও, থানা ধুনট জেলা বগুড়া। বর্তমান ঠিকানা ১৩১/১ আদর্শপল্লী, থানা কাফরুল ডিএমপি, ঢাকা। আন্ডারওয়ার্ল্ডের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের গোড়ার দিকে কালা জাহাঙ্গির নিকেতনে একটি ফ্ল্যাটে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরিবারের কোনো সদস্য ছিলনা সেখানে। সঙ্গী আরেক টপটেরর পিচ্চি হান্নান ও কালু নামের এক বন্ধু। তারাই তার দেখভাল করে। কালা জাহাঙ্গির সেখানে খুব চেচামেচি করতো এবং সন্ত্রাসী কর্মকা- ছেড়ে নামাজ কালাম পড়ার জন্য দুই বন্ধুকে অনুরোধ জানাতো। প্রায় মাসখানেক পর অতিষ্ঠ হয়ে পিচ্চি হান্নান ও কালু তাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর তারা রাতের আধারে মৃতদেহ নিয়ে যায় কালা জাহাঙ্গিরের ডেরা বলে পরিচিত ৭তলা বস্তিতে। সেখানে পিচ্চি হান্নান ও কালু অস্ত্র নিয়ে রাতভর পাহারায় থাকে। এরপর তারা সেখানকার নাইটগার্ড হাসনাত কমান্ডার ২ জন রিকশাচালক ডেকে কবর খুড়ে এবং এরপর স্থানীয় জামায়াত অফিস থেকে লোক ডেকে জানাজা পড়িয়ে লাশ কবর দেওয়া হয়। বিষয়টি রাতেই তাৎক্ষণিকভাবে ওই এলাকায় কর্তব্যরত একজন সাব ইন্সপেক্টরকে জানায় পুলিশ সোর্স কেরুমিয়া। কিন্তু ওই সাব ইন্সপেক্টর গভীর রাতে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুখোমুখি হননি। তিনি বিষয়টি বেমালুম চেপে গেছেন। ২ রিকশাওয়ালাকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনা ফাঁস করলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে হুমকি দেয় কালু।
এ ব্যাপারে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (অপরাধ) বলেন, আসলে কালা জাহাঙ্গিরের মারা যাওয়ার খবর পেলেও সেটা ভাসা ভাসা। তার লাশের সন্ধান বা অথেনটিক কোনো খবর না থাকায় বিষয়টি এমন হয়েছে।
আন্ডারওয়ার্ল্ডের ওই সূত্রটি জানায়, কালা জাঙ্গিরকে কবরস্থ করার ৩ দিন পরই র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পিচ্চি হান্নান নিহত হয়। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম