মাছুম বিল্লাহ: বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ বিনিয়োগে রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ ইস্যুতে বিএনপি চেয়ারাপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থান আসলে ভারত বিরোধিতা কিনা তা পর্যবেক্ষণ করছে দিল্লি।
প্রতিবেশী দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাউথব্লকের একটি সূত্র জানিয়েছে, রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাতিলের যে বক্তব্য সম্প্রতি বিএনপি প্রধান দিয়েছে সেটি তার রাজনৈতিক কৌশল নাকি ভারতবিরোধী নীতির অংশ তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
সাউথ ব্লকের সূত্রটি জানায়, ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বিএনপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাতে এখনো অটল রয়েছে কিনা এবং রামপাল প্রকল্পের বিরোধিতা কি শুধুই রাজনৈতিক ইস্যু নাকি বিএনপি ফের অ্যান্টি-ইন্ডিয়ান মুভমেন্টে ফিরছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
গত বুধবার খালেদা জিয়া রামপালে বিতর্কিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সরকারি সিদ্ধান্তকে গণবিরোধী আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তার এ অবস্থানকে ভারতবিরোধিতা হিসেবে উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা রামপাল ইস্যুতে খালেদার অবস্থানকে ভারতবিরোধী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমও রামপাল নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে। এ প্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খালেদার রামপালবিরোধী অবস্থানকে পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন এবং নতুন নির্বাচনের সহযোগিতা চাইতে গিয়ে দেশটির সমালোচনা ও বিরোধিতা থেকে সরে আসা বিএনপি আশাবাদী হওয়ার মতো কোনো ‘বার্তা’ না পেয়ে ভারতের ব্যাপারে দলীয় নীতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার শুধু বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা না করে দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে সোচ্চার হওয়ার পরিকল্পনা করছে।
বিএনপির নীতিনির্ধারকদের একটি সূত্র জানিয়েছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতার মাধ্যমে তারা ভারতকে একটি মেসেজ দিতে চায়। একটি দলকে সমর্থন দিতে গিয়ে বিএনপিকে অবজ্ঞা, অবহেলা ও তাদের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করলে অবস্থান পাল্টাতে থাকবেন তারা। এরপরও ভারত তাদের অবস্থান না পাল্টালে প্রয়োজনে ‘খুব’ কঠোরও হবে বিএনপি। তবে প্রথমে বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা না করে তাদের বিভিন্ন ‘অন্যায় ও অযৌক্তিক’ কর্মকা-ের গঠনমূলক সমালোচনা করা হবে। এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত এমনই।
সম্প্রতি বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলাপকালে ভারতনীতি সম্পর্কে তাদের মতামত তুলে ধরেন। গত দুই বছরে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক হলেও তাতে সম্পর্কোন্নয়নের অগ্রগতি দেখা যায়নি। এ অবস্থায় ভারতকে আর ছাড় না দিয়ে তাদের ‘বিরুদ্ধে’ অবস্থান এবং তাদের অন্যায় কর্মকা-ের বিরুদ্ধে ‘জনমত’ গড়ে তোলার উপর মতামত এসেছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম