রিকু আমির : ‘অজানা অসীম পূর্ণতা নিয়ে জন্মেছি আমি। এ আমার অহংকার নয়, আত্মবিশ্বাসজাত আত্মোপলব্ধির চেতনালব্ধ সহজ সত্যের সরল স্বীকারোক্তি।’ বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্যে ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত বাঙালির রুচি ও মননের অধীশ্বর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি এটি। যার ৪০তম মহাপ্রয়াণ দিবস আজ ১২ ভাদ্র, শনিবার। ইংরেজি সাল হিসাবে দিনটি ছিল ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন পৃথক বাণী দিয়েছেন।
জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আজ সকালে ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরানখানি। এছাড়া সকাল ৭টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জমায়েত হয়ে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা করে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে গমন, পুষ্পার্ঘ্য এবং ফাতেহা পাঠ। পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে উপাচার্যের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ সালের ২৫ মে, বাংলা ১১ জ্যৈষ্ঠ তিনি জন্মগ্রহণ করেন। দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় এবং পিতার অকাল মৃত্যুতে পরিবারের ভরণপোষণের জন্য তিনি শিশু বয়সেই মক্তবে শিক্ষকতা, হাজী পালোয়ানের মাজারে খাদেম এবং মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করেছেন। দুঃখ-দারিদ্র্য ছিল তার নিত্যসঙ্গী। সে কারণে শৈশবেই ‘দুখু মিয়া’ নামেই পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি।
১৯৭২ সালের ২৪ মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে কবি সপরিবারে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশ সরকার কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন এবং ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে সম্মানিত করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। তার জীবনকাল ৭৮ বছর হলেও ১৯৪২ সালের জুলাই মাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর দীর্ঘ ৩৪ বছর ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি অসহনীয় নির্বাক জীবন কাটিয়েছেন। সম্পাদনা : মোরশেদ