জেমস গমেজ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন গড়েছে পাকিস্তানের ছোট এক শহরের বাসিন্দারা। দেশটির পাঞ্জাব জেলার ফয়সলাবাদ শহরে ক্যাথলিকদের একটি গীর্জার সঙ্গে লাগানো মসজিদ। একদিকে গীর্জা, অন্যদিকে মসজিদ। পৃথিবীতে পাকিস্তান খ্রিস্টানদের জন্য ৬ষ্ঠতম অনিরাপদ স্থান হলেও এই দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়ের বিশ্বাসীদের মধ্যে রয়েছে সম্পৃীতির বন্ধন।
মসজিদটির ইমাম কুরি জুবায়ের বলেন, ১৯৭০ সালে গীর্জাটি স্থাপিত হয়। আর আমাদের মসজিদ স্থাপিত হয় ১৯৯৪ সালে। উভয় ধর্মেও বিশ্বাসীদের যেন উপসনায় কোনো অসুবিধা না হয় এ জন্য আলাদা সময়ে প্রার্থনা ও নামাজ সম্পন্ন হয়। সূত্র : এশিয়া নিউজ
তিনি আরো জানান, আমরা কখনোই চাই না খ্রিস্টানদের প্রার্থনায় কোনো বিঘœ ঘটুক, তেমনি খ্রিস্টান ভাই-বোনেরাও আমাদের সহযোগিতা করেন। ইমাম কুরি জুবায়ের আরো বলেন, আমাদের নবী মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, জগতে এক ঈশ্বর, তেমনি আমাদের সকলের আদি পিতাও আদম।
গির্জার ফাদার বশির বলেন, ২০ বছর আগে যখন এখানে মসজিদটি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখন মুসলিম ভাইয়েরা আমাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন আমাদের কোনো আপত্তি আছে কি না। তখন বলেছিলাম, না আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। তবে আমরা একসঙ্গে বসে খ্রিস্টযাগ ও অন্যান্য উপসনার সময়সূচি ঠিক করি যেন তারা যখন নামাজ পড়বে, সেই সময় আমাদের খ্রিস্টযাগ বা অন্য কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান না থাকে। ফলে আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় না। বরং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।
শহরের একজন মুসলিম মোহাম্মদ রফিক বলেন, এই শহরের খ্রিস্টান-মুসলমাদের হৃদয় অনেক উদার। তারা ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নন। গীর্জা ও মসজিদের সামনে একটি পার্ক রয়েছে, সেখানে দুই ধর্মের মানুষ একসঙ্গে গল্প করেন, আড্ডা দেন।