সোনার চেয়ে দামি
ম্যাক্ডোনাল্ড মিঠুন বৈরাগী
: জোরে সামনে এগিয়ে চলো!
: জ্বি হুজুর!
স্টিমারের সুকানী ও খালাসিরা মিসিসিপি নদীতে স্রোতের অনুকূলে স্টিমারটিকে জোরে চালিয়ে নিয়ে চলল। যাত্রীদের মধ্যে অনেক সোনার খনির শ্রমিক ছিল। তারা তাদের বাক্সের নিচে সোনা লুকিয়ে নিয়ে শহরের সভ্যতায় খরচ করবার জন্য যাচ্ছিল।
হঠাৎ! ধাক্কা লাগার মতো একটা শব্দ শোনা গেল। একটা ডুবে থাকা অজানা জাহাজের সঙ্গে স্টিমারের ধাক্কা লাগল। খালাসিদের একজন নিচের থেকে দৌড়ে এসে সারেংকে বলল, স্টিমারটা ডুবছে! বেগে জল ঢুকছে!
ভীত যাত্রীরা জীবনতরীর জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করল। দেখা গেল, যে কয়টা নৌকা জাহাজে আছে তাতে যে কজন চড়তে পারে এর চারগুণ যাত্রী রয়েছে। সব কটা নৌকা বোঝাই হয়ে ছেড়ে যাওয়ার পর সারেং বললেন, যে যা পাও তাই নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দাও! বাকি যাত্রীরা তখনই তাদের বাড়তি কাপড়চোপড় ফেলে নদীতে ঝাঁপ দিল, আর কাঠকুটো যা পেল তাই নিয়ে ভেসে তীরে উঠল। আশ্চর্য্যভাবে সবাই বেঁচে গেল। সবাই… অবশ্য যারা সারেং-এর কথা শুনেছিল তারা। পনের মিনিট ধরে যখন সবাই প্রাণ বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে তখন একজন লোক জাহাজের খোলের জলের মধ্যে সোনার খনির শ্রমিকদের সোনার বাক্স খুঁজছিল। সে পেয়েও গেল। এত সোনা! একজন লোক এত সোনা সারা জীবনেও যোগাড় করতে পারে না। সোনার থলি নিয়ে সে কোমরে বেঁধে যখন ডেকের ওপর পৌঁছল, তখন স্টিমারটা ডুবে গেল। সে লাফ দিয়ে নদীতে পড়ে অন্যদের মতো ভেসে বাঁচতে চেয়েছিল কিন্তু সে জলের নিচে ডুবে গেল। এই লোভী লোকটার সোনা এত দামি ছিল যে সে তার জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিল, আর নিজেই মারা গেল। কিন্তু ঈশ্বর এর উল্টোটা বলেছেন। তিনি ছেলে-মেয়েদের সোনার চেয়ে দামি করতে চেয়েছেন।
আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করিÑ আমরা ঈশ্বরের বাধ্য থাকব যেন তিনি আমাদের ‘উত্তম সুবর্ণ হইতে… আমাদের দুর্লভ’ করতে পারেন। [ সংগৃহীত ]