নারায়ণগঞ্জে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন’ দুই সহযোগীসহ মাস্টারমাইন্ড তামিম নিহত
ইসমাঈল হুসাইন ইমু ও নুরুল আজিজ চৌধুরী: নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া গোরস্থানের কাছে জঙ্গি আস্তানার একটি বাসায় অভিযানে দুই সহযোগীসহ গুলশানে জঙ্গিহামলার মূল পরিকল্পনাকারী কানাডা প্রবাসী তামিম চৌধুরী নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকাল থেকে ‘হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন নামে সেখানে অভিযান চালায় ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।
নিহত বাকি দুই জঙ্গির নাম মানিক (৩৫) ও ইকবাল (২৫)। এদের মধ্যে মানিক পাইকপাড়ার ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। গত ঈদের আগে মানিক দুই রুমের ওই বাসাটি ভাড়া নেন। তার মাধ্যমেই ওই বাড়িতে ওঠেন গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। এদিকে কল্যাণপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া রিগ্যানকে নিহত মানিক ও ইকবালের ছবি দেখানো হয়েছে। রিগ্যান তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। কল্যাণপুরের অভিযানের সময় ইকবাল একে টোয়েন্টি-টু রাইফেল নিয়ে পালিয়েছিল। শনিবারের অভিযানে ওই রাইফেলটি পাওয়া গেছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, সকাল ৮টার দিকে পাইকপাড়া কবরস্থানের পাশে ওই বাড়িটি ঘিরে ফেলে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। এক ঘণ্টা প্রস্তুতির পর সকাল ৯টার দিকে অভিযান শুরু হয়। লোকাল পুলিশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ, সিটি ইউনিট ও সোয়াট এ অপারেশনে অংশ নেয়।
অভিযান শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেন, তাদের সারেন্ডার করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে গ্রেনেড এবং গুলির মাধ্যমে তারা আত্মপ্রকাশ করেছিল। পুলিশ ও সোয়াট বাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে পরে ফায়ার ওপেন করে।
অভিযানে থাকা ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, জঙ্গিরা প্রচুর গুলি ছুড়ছিল, কল্যাণপুরের চেয়েও এখানে গুলি ছুড়েছিল বেশি। তারা ছয়টি গ্রেনেড ছুড়েছিল। দুটি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়েছে, দুটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় বাড়িটিতে ছিল, দুটি পাশের বাড়ির চালে পাওয়া গেছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছানোয়ার বলেন, ঘরের দরজার কাছে দুজনের লাশ পড়েছিল, তামিমের লাশ ছিল ঘরের ভেতরে। তামিমের কাছে গ্রেনেড এবং বাকি দুজনের একজনের কাছে একে-টোয়েন্টি টু রাইফেল ও পিস্তল ছিল।
গতকাল বিকেলে পাইকপাড়ার ওই বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক হোসেন।
এদিকে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তামিম (৩০) গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বলে পুলিশ দাবি করে আসছিল। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণাও ছিল। আইজিপি বলেছিলেন, তামিম ‘নতুন জেএমবি’র প্রধান। ২০১৩ সালে আসার পর তামিম দেশেই রয়েছেন ধরে নিয়ে অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। সম্পাদনা: আ. হাকিম