জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার করে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার : নিতাই রায়
দীপক চৌধুরী: রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্তকে গণবিরোধী আখ্যায়িত করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার কথা নিয়ে এখন গোটাজাতি উদ্বিগ্ন। এটা হবে জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা আশা করছি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল একান্ত আলোচনায় তিনি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক নিয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে জনগণকে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ সরকার স্বৈরাচারী বলেই জনমত বা দেশের স্বার্থের পরোয়া করছে না। বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হবে, প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হবে, পানি দূষিত হবে। এক প্রশ্নের জবাবে এই সাবেক মন্ত্রী নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, কথায় আছেÑ লোকালয়ে আগুন ধরলে দেবালয় ছুয়ে যায়। এটা এখন জাতীয় ইস্যু। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ জাতীয় রাজনীতিতে সুপরিচিত অনেক নেতা জাতীয় স্বার্থে সুন্দরবনের পাশে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন বন্ধেন দাবিতে আন্দোলন করছেন। বিকল্প বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও বিকল্প জ্বালানির সন্ধান করার আহ্বান জানান নিতাই রায়।
জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এই বিএনপি নেতা বলেন, দলের প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার করে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। সরকারের মন্ত্রিসভা কমিটির এ সিদ্ধান্ত অনৈতিক, আত্মঘাতী ও দুর্ভাগ্যজনক। দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতির সূচনা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। পদক প্রত্যাহার করে নিলে জাতিকে বিভাজনের রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হবে। আওয়ামী লীগের হীনমন্যতা, নিচুমনের পরিচয়ের কারণসহ রাজনৈতিক দল বিএনপির ভয়ে ভীত হয়ে তা করা হচ্ছে। অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী নিতাই রায় চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বীরউত্তম পদকে ভূষিত করা হয়েছিল। এটা কে করেছিলেন, কার আমলে? তিনি তো স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের আমলে। আমি তো মনে করি এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নিলেÑ তা হবে শেখ মুজিবুর সাহেবকে ছোট করা। স্বাধীনতা পদক প্রবর্তন করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এখন তার স্বাধীনতার সম্মাননার পদক ছিনিয়ে নেওয়া হবে, তার সম্মান থাকবে না; কিন্তু তার কীর্তি থাকবে। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, সরাসরি যুদ্ধ করেছেন এটাই চির সত্য। এ সরকারের এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা কত বড় স্বৈরাচার, কতবড় দুর্নীতিগ্রস্ত তা জনগণ জানে। বিএনপিকে জনগণ পছন্দ করে বলেই তারা বিএনপিকে ধ্বংস করতে চায়। আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর নির্যাতন করছে, দখলবাজি করছে। এ দল কখনো গণতান্ত্রিক নয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যে রাজনীতি করছে, তাতে তারা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।