
আমি কথা বলায় তার ‘প্রধানমন্ত্রী’ গায়ে জ্বালা ধরেছে : খালেদা
কিরণ সেখ: রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিপক্ষে আমি কথা বলায় তার ‘শেখ হাসিনা’ গায়ে জ্বালা ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তিনি বলুক আমি যে তথ্য দিয়েছি তা কি ভুল, না কি মিথ্যা। আমি বলেছি, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হলে ক্ষতি হবে আমাদের লোকজনের। সুন্দরবনের আশপাশে কোনো মানুষ থাকতে পারবে না। কিন্তু আমরা বলেনি, আমরা বিদ্যুৎ চাই না। আমরা অবশ্যই বিদ্যুৎ চাই। তবে সেটা সুন্দরবনের কাছে নয়, অন্যকোনো স্থানে।
গতকাল শনিবার রাতে চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট আয়োজিত এক শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে’ এ শুভেচ্ছা বিনিময়ে তিনি বলেন, ‘রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হলে দেশের কোনো ক্ষতি হবে না, যারা এই কথা বলছেন তারাই রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করছে। ক্ষমতায় আছে বলে জবাব দিচ্ছে না। কিন্তু যে দিন ক্ষমতার বাইরে যাবে সেই দিন জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, রাষ্ট্র কারো পৈত্রিক সম্পত্তি না। আর যদি পৈত্রিক সম্পত্তিও হয় তাহলেও দেশের বিরুদ্ধে গেলে তা বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সকল কাজই রাষ্ট্রবিরোধী। আমি তাদের সকল রাষ্ট্রবিরোধী কাজকর্মগুলো জনগণের কাছে খুব শিগগির তুলে ধরবো। আর আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের ‘সরকার’ সরে যেতে বাধ্য করতে হবে। তবে তাদের ‘সরকার’ আল্লাহ ও সকল ধর্মের মানুষ করবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো ধর্মই মানে না। সেই কারণে তারা সকল অপকর্ম ও পাপ কাজের সঙ্গে জড়িত।
আওয়ামী লীগ তাদের দুর্নীতি ও অপকর্মগুলো ঢাকতে একের পর এক ইস্যু তৈরি করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গুলশান হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার সঠিক তথ্য সরকার জনগণকে জানায়নি। এমনকি এই ঘটনার কোনো তদন্তও হয়নি। আর এটা শেষ না হতেই তারা নিয়ে আসলো কল্যাণপুরে জঙ্গি গ্রেফতার। কিন্তু সত্যিকার অর্থে সরকার এখন পর্যন্ত কোনো জঙ্গিকে ধরতে পারেনি।
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিদের কেনো জীবিত ধরা হচ্ছে না? আপনারা বলছেন, পুলিশ বাহিনী শক্তিশালী। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমি জানি পুলিশ শক্তিশালী। তবে কেনো ধরতে পারলেও জঙ্গিদের জীবিত ধরা হচ্ছে না।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার এখন জঙ্গিবাদের সাথে দেশের যুবকদের জড়িত করছে এবং ইংরেজি ইউনিভার্সিটিকে দায়ী করছে। তাই তারা ইউনির্ভাসিটিগুলো বন্ধ করেছে। কিন্তু এ ইউনিভার্সিটিগুলো খুবই ভালো। বিদেশ থেকে অনেক শিক্ষিকরা শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করান।
বেগম জিয়া বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকার সময় বাংলাভাইসহ বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে জীবিত ধরেছি। তাদের কাছ থেকে অনেক তথ্যও পেয়েছি। কিন্তু বর্তমান সরকার একটি জঙ্গিকেও জীবিত ধরেনি।
এর আগে শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ।
এসময় বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মো. শাহজাহান,নিতাই রায় চৌধুরী, জয়ন্ত কুমার কুন্ড তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তী।
