ফারাক্কা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই!
কল্লোল মোস্তফা
নদীর উজানে বাঁধ দিলে এবং আরেক দেশের হাতে সেই বাঁধের পুরো নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিয়ে আশ্বস্ত হয়ে বসে থাকলে কি ঘটে তার ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হলো ফারাক্কা বাঁধ। টিপাইমুখ বাঁধ বিরোধী আন্দোলনের সময় আমাদেরকে আশ্বাস শোনানো হতোÑ টিপাইমুখ বাঁধ হলে নাকি বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।
এইসব ‘কোন ক্ষতি হবে না’ জাতীয় আশ্বাস যে কত বড় মিথ্যা প্রতিশ্রুতি তা তিস্তা কিংবা ফারাক্কার দৃষ্টান্ত থেকেই বোঝা যায়। শুষ্ক মৌসুমে ভারত এই ব্যারেজগুলোর মাধ্যমে পানি সরিয়ে নেয় এবং বর্ষা মৌসুমে নিজ দেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য অবাধে পানি ছেড়ে দেয়। ব্যারেজের কারণে নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় ও ব্যারেজে আটকে রাখা পানি হঠাৎ করে ছেড়ে দেওয়ায় স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বন্যা পরিস্থিতি অনেক খারাপ আকার ধারণ করে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে তার খেসারত দিতে হয়। সবচেয়ে আফসোসের ব্যাপার, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনরা ভারতের এই স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করা তো দূরের কথা উল্টো আরও দেশের মানুষকে ভুল বোঝায়, আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে। দুই দিন আগেও দেখলাম, বিহারের বন্যা নিয়ন্ত্রণে ফারাক্কার সব গেট খুলে দেওয়ার খবরে বাংলাদেশের মন্ত্রী এবং আমলারা বলে বসল এতে নাকি বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে না। কোথায় তাদের উচিত ছিল ভারতের এভাবে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করা, তা না করে তারা উল্টো আশ্বস্ত হয়ে বসে থাকলেন! এখন সেই পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে যে একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে, তার দায় কে নিবে, খেসারতই বা কে দিবে।
লেখক : প্রকৌশলী ও গবেষক / সম্পাদনা : জব্বার হোসেন