হাসান আরিফ : কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে ভারতীয় গরু-মহিষ প্রবেশে নমনীয় থাকবে সরকার। ফলে করিডোর দিয়ে গরু-মহিষ প্রবেশে জরিমানা ৫০০ টাকাই অপরিবর্তীত থাকছে। ধর্মভীরু মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে কোনো আঘাত না করতেই এই সিদ্ধন্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) অনুষ্ঠিত পুনর্গঠিত চোরাচালান নিরোধ কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্সের দ্বিতীয় সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান ও টাস্কফোর্সের সভাপতি মো. নজিবুর রহমান। এসময় এনবিআরের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপিস্তিত ছিলেন।
সভায় বলা হয়, বর্তমানে করিডোর দিয়ে গরু ও মহিষ প্রবেশে ৫০০ টাকা জরিমানা রাখা হয়। একইভাবে ছাগল ও দুম্বায় ২০০ টাকা আর উট প্রবেশে ৬ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। যা অপরিবর্তীত রাখা হবে।
জানা গেছে, ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে শিথিলতা দেখিয়ে থাকেন সীমান্তরক্ষিরা। অনেক রাখাল আবার বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনকে উপেক্ষা করে গরু-মহিষ নিয়ে আসে। ভারতের গরু ব্যবসায়ীদের ফোন করে গরু-মহিষের চাহিদা বলে দিলেই রাখালের মাধ্যমে চলে আসছে সীমান্তের এপারে। সীমান্তের পশুর হাটগুলোতে ভিড় করছেন ব্যাপারীরা। শুল্ক বিভাগে ৫০০ টাকা দিয়ে করিডোর ছাড়পত্র নিয়ে এসব গরু-মহিষ বিভিন্ন মোকামে হাত-বদল হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। আবার করিডোর ফি ফাঁকি দিতে অনেক সময় গরুর সংখ্যা কম দেখানো হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে সবচেয়ে বেশি গরু আসে। হাজার হাজার গরু এলেও এর মূল্য পরিশোধ করা হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে। ফলে মার খাচ্ছে গরু লালন-পালনকারী কৃষক ও খামারিরা। ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন তারা।
সভায় আরও বলা হয়, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা গরু, মহিষ, ছাগল, দুম্বা ও উট করিডোর দিয়ে প্রবেশের জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। কিন্তু এনবিআর পর্যালোচনা করে দেখেছে যে, এটা করা ঠিক হবে না। এতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাছাড়া জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধি করলে চোরাইপথের আমদানিও বেড়ে যাবে। এতে সরকার রাজস্ব হারাবে। যদিও এই খাতে সরকারের রাজস্ব খুবই সামান্য।
টেকনাফ স্থলবন্দর কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গতবছর জুলাই মাসে শাহপরীরদ্বীপ ক্যাডল করিডোর দিয়ে ৪২৫টি গরু, ৭১০টি মহিষ এবং ৭টি ছাগল আমদানি হয়েছে। আগস্ট মাসে এসেছে ১ হাজার ৯৩৮টি গরু, এক হাজারটি মহিষ ও ৩৮টি ছাগল। তবে ব্যবসায়ীদের ধারণা, এই দুই মাসে করিডোরের মাধ্যমে বৈধভাবে এবং চোরাইপথে অবৈধভাবে ১০ হাজারেরও বেশি গবাদিপশু এসেছে। সম্পাদনা: আ. হাকিম