সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রবিরোধী আইনের মামলা চার্জশিটের আগে অনুমোদন নিতে সারাদেশে পুলিশ সদর দফতরের চিঠি
আজাদ হোসেন সুমন: সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা ১১৭ মামলায় সরকারের অনুমোদন না নিয়ে চার্জশিট দেওয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্র ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা আদালতে চার্জশিট দাখিল করার আগে সরকারের অনুমোদন নেয়ার জন্য পুলিশ সদর দফতর থেকে সব জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা ১১৭টি মামলার ক্ষেত্রে সেই আইন লঙ্ঘন করে সরাসরি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। আদালত ওই চিঠিগুলো অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় চার্জশিটগুলো অনুমোদন দেয় এবং বিষয়টি পুলিশ সদর দফতরের নজরে আনে।
রাজধানীর ৩৪টি থানায় এসব মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ৭০ জনের বেশি তদন্ত কর্মকর্তা এসব মামলা তদন্ত করেছেন। এ অবস্থায় চার্জশিট দাখিলকারী প্রতিটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, গত ৯ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব এফ এম তৌহিদুল আলম স্বাক্ষরিত নির্দেশনা পাঠানো হয় পুলিশ সদর দফতরে। তাতে আইন লঙ্ঘন করায় সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের উপ-মহাপরিদর্শক (অপরাধ) হুমায়ুন কবীর গতকাল আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, ২০০৯ সালে আইনটি প্রণয়ন হয় তখন বিষয়টি পরিষ্কার ছিল না। এরপর ২০১২ সালে প্রনীত বিধিমালায় বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়। আর উল্লেখিত মামলাগুলো ২০১২ সালের আগের। ফলে মামলার তদন্তকারীরা বিভ্রান্ত হয়েছে-এটাকে তিনি অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে উল্লেখ করে বলেন, যেন আর ভুল না হয় সে লক্ষ্যে সম্প্রতি সারাদেশে পুলিশ বাহিনীকে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠানো হয়। ভারপ্রাপ্ত এআইজি ক্রাইম জেসমিন বেগম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ সংক্রান্তে কা:বি:১৯৬ ধারার আলোকে পেনাল কোডের ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে উল্লেখিত ধারাসমূহ (১২১,১২১-ক, ১২২,১২৩,১২৩-ক, ১২৪,১২৪ক, ১২৫, ১২৬, ১২৮, ১২৯, ১৩০),৯ম-ক অধ্যায়ের ধারা সমূহ (১৭১-ক-১৭১ঝ) এবং পেনাল কোডের ১০৮-ক,১৫৩-ক, ২৯৪-ক,২৯৫-ক ও ৫০৫ ধারা কোনো অপরাধে অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে অভিযোগকারীকে কা:বি: ১৯৬ ধারার বিধানবলে সরকারের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি ক্রাইম হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রথম ভুলের বিষয়টির জন্য সতর্ক করা হয়েছে-এই চিঠির পরও কোনো তদন্তকারী কর্মকর্তা রাষ্ট্রবিরোধী বা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তখন কারো কোনো অজুহাত বা ওজর আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম