ইমরুল শাহেদ: সোমবার ইয়েমেনের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর এডেনের একটি সেনা প্রশিক্ষণ শিবিরে আইএসের আত্মঘাতী হামলায় ৬৫ জন নবনিযুক্ত সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। আরব নিউজ জানিয়েছে, দাতব্য চিকিৎসালয় মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়ারেসের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের মধ্যে ৪৫ জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। মেডিকেল সূত্রে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার শিকার অনেককেই আরও দুটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫। চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, এছাড়া আহত হয়েছেন ৮০ জনেরও বেশি।
নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, হামলাকারী তার গাড়িটি দ্রুত গতিতে নবসংগৃহীত সেনাদের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেয় এবং বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলার কয়েক ঘণ্টা পর আইএসের আমাক নিউজ এজেন্সির এক ট্যুইটার বার্তায় বলা হয়, ‘ইসলামিক স্টেটের একজন যোদ্ধার হামলায় ৬৫ জন নতুন সৈনিক নিহত হয়েছে।’
এ বন্দরনগরীতে ইয়েমেনের অস্থায়ী সরকারের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে টার্গেট করে একের পর এক বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। তবে আল-কায়েদা বা দায়েশের জিহাদিরা এ অঞ্চলে হামলার দায় খুব একটা স্বীকার করতে দেখা যায় না। তারা দেশের ঘোলাটে পরিস্থিতিতে দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্ব ইয়েমেনে তাদের সুবিধা তৈরি করে নিচ্ছে। গত দুমাসে ইয়েমেন কর্তৃপক্ষ এডেনে কয়েকশ নতুন সৈন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে। লক্ষ্য হলো দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশটিকে জিহাদিমুক্ত করা। সিনহুয়া ইয়েমেনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তারা প্রায় পাঁচ হাজার নতুন সৈন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। নতুন প্রশিক্ষণ পাওয়া এসব সেনা সৌদি বর্ডার গার্ড ফোর্সের পাশাপাশি থেকে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
এ মাসের শুরুর দিকে ইয়েমেনের সরকারি বাহিনী সৌদি জোটের সহায়তায় এবিয়ান প্রদেশের রাজধানী জিনজিবার মুক্ত করেছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, এবিয়ানের কয়েকটি শহর মুক্ত করার পর তারা আল-কায়েদার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আল-মাহফিডে প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েন। জঙ্গিরা মুক্ত শহরগুলোর আশপাশে এখনো অবস্থান করছেন বলে নিরাপত্তা সূত্রে বলা হয়েছে। ইয়েমেন সরকারকে সহায়তা করছে আরব জোট এবং ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের সহায়তা করছে ইরান। গত মার্চ মাস থেকেই ইয়েমেনে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে এ দ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে।