রবিউল আলম
গরু নিয়ে ভারতের কিছু মানুষ গোরক্ষা কমিটি করেছে। ভারতীয় গরু রক্ষা করতে গিয়ে ভারতীয় কৃষককে স্বর্বসান্ত করছেন। গরুকে খাওয়াতে না পেরে রাস্তায় ছেড়ে দিচ্ছেন। যে কৃষকের চার-পাঁচটা গরু আছে তার মরার অবস্থা হয়েছে। ভারতের ৫টি প্রদেশের ১৫% কৃষক গরু-মহিষ লালনপালন করে বাংলাদেশে পাচারের আশায়। বাংলাদেশে গরুর বিশাল বাজার গোরক্ষা কমিটির কারণে হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছিল। বিগত ৩/৪ বছর কোরবানিকে সামনে রেখে ভারতীয় গোরক্ষা কমিটির সীমান্তে গরু-মহিষ লুট করার কারণে বাংলাদেশি ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। বিকল্প পথ মায়ানমার, ভূটান, নেপাল থেকে গরু-মহিষ আমদানি করে। সংখ্যায় কম হলেও নিরাপদ হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা সেদিকে চলতে থাকে। ভারত সরকার ও ব্যবসায়ীরা গরু-মহিষ পাচার থেকে ৫০-৬০ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়ে মমতা ব্যানার্জি, নরেন্দ্র মোদি ও প্রশাসন নড়েচড়ে বসেন। গোরক্ষা কমিটির কার্যকলাপে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এদিকে বাংলাদেশি কৃষকরা পশুপালন লাভজনক হওয়ায় পশুপালনে উৎসাহিত হয়ে ছোট ছোট অসংখ্য গরু-মহিষ উৎপাদন ফার্ম করে এগিয়ে চলছে। পশুপালন উন্নয়ন কর্মসূচিতে সরকার কৃষকদেরকে উৎসাহিত করতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
ইতোমধ্যে এই লাভজনক পেশায় অনেক বড় বড় কোম্পানি কোটি কোটি টাকা লগ্নী করে এগিয়ে এসেছে পশুপালনে। এখন সরকার পতিত চর অঞ্চল, বনাঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চল বন্দোবস্ত দিয়ে কোম্পানিগুলোকে সহযোগিতা করলে বাংলাদেশে কোরবানির চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও মাংস রপ্তানি করতে পারবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ মাছ, মুরগি, আম, পেয়ারা, তরি-তরকারি রপ্তানি করছে। তবে কেন গরু উৎপাদনে আমরা সক্ষম হবো না? তাই অযথা গরু নিয়ে যুদ্ধ না করে এবং গরু আমদানি করতে আমাদের জীবন না দিয়ে, গরু না এনে দুই দেশের সেতুবন্ধন অটুট থাকুক আমরা সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাব। যদি ভারতের প্রয়োজনে গরু বিক্রি করতে চায় আমরা ভেবে দেখব। অযথা বন্ধু রাষ্ট্রকে গরু নিয়ে রাজনীতি করতে দেওয়া যায় না। গরু ধর্মীয় অনুভূতি, আমাদের হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়। অন্যের ধর্মকে সম্মান করা মুসলমানদের পবিত্র দায়িত্ব। তাই গরু না এনে দুই দেশের জনগণের মাঝে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করি। স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের অবদান মনে রেখে গরুর জন্য আমাদের জীবন নিবে ভারতীয় সৈনিকেরা, তা হতে দেব না এবং হতে দেওয়া যায় না।
লেখক : মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন