আরিফ জেবতিক
বছর দুয়েক আগের ঘটনা। একজন আমাকে ইনবক্সে একটি ছবি দিলেন। বয়স্ক ভদ্রলোকের ছবি। আমি বললাম, ‘এই ছবি দিয়ে কী হবে?’ তিনি বললেন, ‘এই ভদ্রলোক স্মৃতিভ্রষ্ট। বাড়ি থেকে দুদিন আগে হারিয়ে গেছেন। আপনার তো অনেক বড় ফেসবুক নেটওয়ার্ক। ছবিটি যদি ছড়িয়ে দিতেন, তাহলে কেউ না কেউ হয়তো খুঁজে পেতেন উনাকে।’
বিষয়টা আমার ঠিক বিশ্বাসযোগ্য ঠেকল না। এই ১৬ কোটি মানুষের ভিড়ে কেউ একবার হারিয়ে কোন পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কার কাছে এই খবর পৌঁছাবে। তবু একজন মানুষ হারিয়ে যাওয়া নিয়ে কথা। আমি ছবিটি শেয়ার করলাম। আরও অনেকেই করলেন। তারপরই ঘটল সেই অদ্ভুত ঘটনা।
পরদিন ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশনে সেই ভদ্রলোককে দেখে চিনে ফেললেন ফেসবুক ব্যবহারকারী দুই তরুণ। মাত্র একদিনের মধ্যেই সেই ভদ্রলোক ফিরে যেতে পারলেন তার আপন ঠিকানায়। সেইদিন আমি সোশ্যাল নেটওয়ার্কের শক্তি সম্পর্কে আরেকবার বিশ্বাসী হলাম।
আমি নিজেই উদ্যমী হয়ে একটি ছবি শেয়ার দিচ্ছি। অনেক আশা নিয়ে দিচ্ছি। ছবির এই শুয়োরটির নাম ওবায়দুল। রিসা নামের ক্লাস এইটের এক মেয়েকে সে অবলীলায় খুন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এদেশের পুলিশের প্রায়োরিটি লিস্টে তনু-মিতু-রিশার খুনিরা নেই। অনেক সময়ই খুনির নাম-ঠিকানাই প্রকাশিত হয় না। এইবার হয়েছে। ওবায়দুলের ছবি আমরা পেয়েছি। ইতোমধ্যে ফেসবুকে এই ছবি কয়েক হাজার বার শেয়ার হয়েছে। আসুন, আমরা সবাই চোখ-কান খোলা রাখি।
আপনার গলির মোড়ে দাঁড়ানো লোকটির দিকে তাকান, নতুন আসা ভাড়াটিয়ার মুখের দিকে তাকান, বাসে-টেম্পুতে বসে থাকা সহযাত্রীর দিকে তাকান, ফার্মগেট কি ফেরিঘাটের দিকে তাকানÑ এই ছবির লোককে খুঁজে বের করতে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করতে হবে। সন্ধান পাওয়া মাত্র নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন অথবা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ফেসবুক পেজে জানান।
বাংলাদেশ খুব বড় কোনো দেশ নয়, এখানে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে এই খুনিকে খুঁজে বের করতে পারব, আমাদের পারতেই হবে। এই শুয়োরটাকে আমরা বেঁধে ফেলব, এই শুয়োরটাকে বধ করতেই হবে আমাদের।
লেখক : সাংবাদিক ও লেখক