রায় নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন, তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান না
হায়দার আকবর খান রনো
মীর কাসেমের আলীর ফাঁসির রায় বহাল রয়েছে, এটা নিশ্চয়ই আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। ভালোলাগার বিষয়। মাননীয় আদালতের বিচারের রায়ের ওপর কোনো কথা বলা উচিত নয়। বিচারটি স্বচ্ছ হয়েছে বলেই আমি মনে করি। বিচারের রায় নিয়ে যারা প্রশ্ন করেন, তারা আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান না। স্বাধীনতার অপশক্তিদের পক্ষাবলম্বন করেন।
নুরেমবার্গ ট্রায়ালের তুলনায় কিংবা হেগে সাম্প্রতিক সময়ে যে সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, তার তুলনায় বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়াটি অনেক বেশি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, অনেক বেশি স্বচ্ছ, আসামিদের প্রতি অনেক বেশি উদার।
যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেন। তার মধ্যে জামায়াত অন্যতম। নেতাদের বাঁচানোর জন্য জামায়াত অনেক কিছুই বলে। কিন্তু বিএনপি? বিএনপিও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়, হওয়া উচিত বলেও জানায়Ñ কিন্তু বিচারটি স্বচ্ছ, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইত্যাদির কথা তারা বলে। এমন কথা বলে বিএনপি আসলে আড়ালে জামায়াত নেতাদের পক্ষাবলম্বন করে। বিএনপি জামায়াত নেতাদের সঙ্গেও রয়েছে। সেক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা প্রাপ্য। কারণ যে দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে রায় কার্যকর করছেন, তাকে অভিন্দন ও সাধুবাদ জানাই।
সব যুদ্ধাপরাধীদেরই বিচার শেষ করা উচিত। শেষ হওয়া দরকার। তবে প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারটি নিশ্চিত হয়। যদিও এ পর্যন্ত যে বিচার হয়েছে, তারা যে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত নয়, এমনটি নয়। প্রকৃতি যুদ্ধাপরাধীরাই এখনও পর্যন্ত সাজা পেয়েছে। এ পর্যন্ত যাদের বিচার হয়েছে, তারা সবাই পরিচিত মুখ। আমরা সবাই জানি, একাত্তরে তারা কি করেছে। তারা যে মুক্তিযুদ্ধ ও পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেছিল এটা তো মিথ্যা নয়। এখন কে কয়টা খুন করেছে, কে কয়টা ধর্ষণ করেছে তা আমরা জানি না। কিন্তু তারা যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করেছে, হত্যা, ধর্ষণ এবং মানুষের বাড়িঘর জ্বালাওপোড়াও করেছিল, হানাদারদের সহযোগিতা করেছে, স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তা কে না জানে।
পরিচিতি : সভাপতিম-লীর সদস্য, সিপিবি / সম্পাদনা: জব্বার হোসেন