বিএমএ নির্বাচন : কড়া হিসাব-নিকাশ স্বাচিপে
রিকু আমির: বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে ১১২ দিন সময় থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে লবিয়িং-তদবির থেমে নেই সরকার সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতাদের। সভাপতি-মহাসচিব পদ দুটি নিয়ে চলছে তীব্র হিসাব-নিকাশ। শোনা যাচ্ছে, এ দুটি পদে সম্পূর্ণ নতুন মুখ আসবে স্বাচিপ থেকে। আর নির্বাচন নিয়ে স্বাচিপের কোনো নেতাকর্মী তেমন কিছু বলছেন না প্রকাশ্যে।
আগামী ২২ ডিসেম্বর বিএমএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৩৭ হাজার ভোটারের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে এ নির্বাচনের জন্য গঠিত পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন।
সূত্রে জানা গেছে, বিএমএর বর্তমান সভাপতি, খ্যাতিমান চিকিৎসক, ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান আর থাকছেন না বর্তমান পদে। এখন পর্যন্ত এটা অপ্রকাশ্য কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। তার পরিবর্তে কাকে কেন্দ্রীয়ভাবে সভাপতি পদের জন্য মনোনীত করা হবে- সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে এরই মধ্যে সম্ভাব্য সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে- আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের অধ্যাপক, বিএমএর সাবেক মহাসচিব, ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ডা. কাজী শহীদুল আলম, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাচিপের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হকের নাম। এছাড়াও শোনা যায়- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত; বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি প্রশাসন, বিএমএর সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ; বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়ার ভাই অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়ার নাম।
ঘনিষ্ঠ দুটি সূত্র জানায়, কাজী শহীদুল আলম ও আফম রুহুল হক- এ দুজনের একজনই সভাপতি পদে নির্বাচন করবে। এখানে কাজী শহীদুলকে দেখা হচ্ছে- জ্যেষ্ঠ, ক্লিন ইমেজ ও বিএমএর সাবেক মহাসচিব হিসেবে। রুহুল হককে দেখা হচ্ছে- সাবেক মন্ত্রী, সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তি, আওয়ামী লীগের মূলধারার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ও স্বাচিপের সাবেক সভাপতি হিসেবে। স্বাচিপের কারও মতে- রুহুল হক একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক, পাঁচ বছর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন, সে হিসেবে বিএমএর সভাপতি হলে চিকিৎসকদের হয়ে কাজ করার উপযুক্ততা তারই রয়েছে। চিকিৎসক, দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার কোথায় কী- এসব তার চেয়ে ভালো অন্য সভাপতি প্রার্থীরা জানেন না।
এদিকে, বিএমএর বর্তমান মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলানকে বর্তমান পদে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে না বলে জানা গেছে। সূত্র বলছে- দুই সংগঠনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ একজন ব্যক্তিকে আর দেওয়া হবে না। স্বাচিপের কেন্দ্রীয় নেতারা এমনটাই ভাবছেন। যদিও মহাসচিব পদে সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে- স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এএসএম জাকারিয়া স্বপন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়–য়ার নাম।
নাম না প্রকাশের শর্তে স্বাচিপের সিনিয়র একজন নেতা জানান, সাধারণত স্বাচিপের মহাসচিবকেই বিএমএর মহাসচিব পদের জন্য মনোনীত করা হয়। সে হিসেবে এমএ আজিজকে বিএমএর মহাসচিব পদে মনোনীত করার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়াও স্বাচিপের তরুণ নেতাকর্মীদের কাছে জনপ্রিয় হিসেবে পরিচিত ডা. উত্তম কুমার বড়–য়াকেও মহাসচিব পদের জন্য মনোনীত করার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। এ নেতা আরও জানান, আসলে কে বিএমএর সভাপতি-মহাসচিব পদের জন্য নির্বাচনে অংশ নেবেন- তা নির্ধারণ করে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্পাদনা: মোরশেদ